উন্নত ও অনুন্নত অঞ্চলে একই হারে কর, ভ্যাট ও ঋণের সুদহার প্রযোজ্য থাকায় পিছিয়ে পড়া রংপুর বিভাগে শিল্পায়ন হচ্ছে না বলে দাবি করেছেন ব্যবসায়ী নেতারা। তাদের দাবি, পিছিয়ে পড়া রংপুর বিভাগের জন্য সরকারের নীতি-নির্ধারণী মহলকে বিশেষ শিল্প সহায়ক নীতি গ্রহণ করতে হবে। একই সঙ্গে শিল্পায়নের ক্ষেত্রে যেসব সমস্যা ও প্রতিবন্ধকতা রয়েছে তা দূর করতে সংশ্লিষ্টদের আরো বেশি আন্তরিক হতে আহ্বান জানানো হয়।

বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রংপুর চেম্বার ভবন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ‌‌‌'রংপুর বিভাগে শিল্পায়নের সম্ভাবনা ও সমস্যা' শীর্ষক মতবিনিময় সভায় ব্যবসায়ীরা নেতারা এ দাবি করেন। রংপুর চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাষ্ট্রি (আরসিসিআই) এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।

অনুষ্ঠানে আরসিসিআই সভাপতি  আকবর আলীর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন রংপুর বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার হাবিবুর রহমান। 

তিনি বলেন, ব্যবসায়ীদের ব্যবসা মানে দেশে নতুন কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাওয়া। কারণ তারা নতুন নতুন উদ্যোগ নিলে কর্মসংস্থান বাড়বে। বিভাগীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে রংপুর অঞ্চলের ব্যবসায়ীদের জন্য সবধরণের সহযোগিতা দেওয়া হবে। আমরা চাই কর্মসংস্থান বাড়াতে। রংপুর বিভাগে শিল্পায়নের ক্ষেত্রে যেসব সমস্যা ও প্রতিবন্ধকতা রয়েছে তা সরকারের নীতি-নির্ধারণী মহলে পর্যায়েক্রমে তুলে ধরা হবে।

তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে গত ২ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে রংপুর বিভাগের সরকারি কর্মকর্তাদের অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় এই অঞ্চলে উন্নয়নে বেশ কিছু প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী রংপুরের ব্যাপারে খুবই আন্তরিক। উত্থাপিত প্রস্তাবনাগুলো বাস্তবায়নে আশ্বাস দিয়েছেন।  

সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন- পুলিশের রংপুর রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি এস.এম রশিদুল হক, কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট, রংপুর বিভাগীয় কমিশনার ড. নাহিদা ফরিদী, রংপুরের জেলা প্রশাসক মোবাশ্বের হাসান, জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মোছাদ্দেক হোসেন বাবলু, মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল কাশেম, পরিবেশ অধিদপ্তরের রংপুর বিভাগীয় পরিচালক সৈয়দ ফরহাদ হোসেন প্রমুখ।

সভায় ব্যবসায়ী নেতারা রংপুর বিভাগের প্রতিটি জেলায় অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা, তিস্তা মহাপরিকল্পনার দ্রুত বাস্তবায়ন, মোঘলহাট-গীতালদাহ, চিলাহাটি-হলদিবাড়ী স্থল বন্দর চালুকরণ, সৈয়দপুর বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিকমানের বিমানবন্দরে উন্নীত করার দাবি জানান। তারা এই অঞ্চলের উন্নয়নে জাতীয় বাজেটে বরাদ্দ বাড়ানোসহ অর্থায়নের সমস্যা নিরসন, কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পের বিকাশ, পর্যটনশিল্পের উন্নয়ন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের বিকাশে গুরুত্বারোপ করেন। পাশাপাশি চা প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পের উন্নয়নসহ পরিবেশ ছাড়পত্রে জটিলতা নিরসন, ভ্যাট ও ট্যাক্স সহনশীল পর্যায়ে আদায়, মহিলা উদ্যোক্তাদের পণ্য প্রদর্শন ও বিপণণের প্রতিবন্ধকতা তুলে ধরে তার সমাধান দাবি করেন।

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/এমএসএ