নওগাঁর আত্রাইয়ে আবুল হোসেন (৫২) নামে এক স্কুল শিক্ষকের পথ রোধ করে দুই পায়ের রগ কেটে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে উপজেলার পাঁচুপুর মোড় এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় ওই শিক্ষককে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়।

আবুল হোসেন আত্রাই উপজেলার জগদাস উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। তিনি একই উপজেলার বিহারীপুর গ্রামের বাসিন্দা। প্রকাশ্য দিবালোকে শিক্ষকের ওপর হামলার পর থেকেই ওই এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। বিষয়টিকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি বলেও মনে করছেন অনেকেই।

স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, স্কুল ছুটির পর বিকেলে মোটরসাইকেল যোগে বাড়ি ফিরছিলেন শিক্ষক আবুল হোসেন। ফেরার পথে পাঁচুপুর মোড়ে পৌঁছালে দুর্বৃত্তরা তার পথ রোধ করে মারপিট আরম্ভ করে। এক পর্যায়ে ওই শিক্ষকের দুই পায়ের গোড়ালির রগ কেটে পালিয়ে যায় তারা। পরে স্থানীয়রা ওই শিক্ষককে উদ্ধার করে আত্রাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়। সেখানে নিয়ে গেলে অবস্থা গুরুতর হওয়ায় জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য আবুল হোসেনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে রেফার্ড করেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় কয়েকজন বলেন, গত আগস্টে বিশা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যানের ওপর সশস্ত্র হামলা করেছিল তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ। অল্পের জন্য তিনি বেঁচে যান। এর রেশ না কাটতেই এবার প্রকাশ্য দিবালোকে একজন শিক্ষককে কুপিয়ে পায়ের রগ কেটে দেওয়া হলো। পুলিশ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করলে এসব ঘটনা কখনোই ঘটতো না। নির্বাচনের আগে উপজেলার প্রত্যেকটা এলাকায় পুলিশের নজরদারি বাড়ানো উচিত।

আত্রাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. দোলন আক্তার ঢাকা পোস্টকে বলেন, রাস্তায় পড়ে থাকা অবস্থায় একজন ভ্যান চালক আবুল হোসেনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। তার সঙ্গে পরিবারের কেউ ছিল না। ওই শিক্ষকের বাম পা গোড়ালি থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। ডান পা গোড়ালি থেকে অর্ধেক বিচ্ছিন্ন। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে রামেকে রেফার্ড করা হয়েছে। 

আত্রাই থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তারেকুর রহমান সরকার ঢাকা পোস্টকে বলেন, একজন শিক্ষককে পথরোধ করে মারপিটের তথ্য আমরা পেয়েছি। ঘটনাটি কারা ঘটিয়েছে তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় কেউ অভিযোগ করেননি।

প্রকাশ্য দিবালোকে পথরোধ করে একজন শিক্ষকের পায়ের রগ কেটে দেওয়ার ঘটনা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে ওসি বলেন, ওই শিক্ষকের পায়ের রগ কেটে দেওয়ার কোনো তথ্য আমার জানা নেই। যারা বলছে তাদের সঙ্গে কথা বলেন। এটা একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলেও দাবি করেন তিনি।

আরমান হোসেন রুমন/এএএ