হাসি বেগম

ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের শৌলডুবী গ্রামের হাবিবুর রহমানের মেয়ে হাসি বেগম (২৪) গত ৭ সেপ্টেম্বর নিখোঁজ হন। এর মধ্যে ২০ সেপ্টেম্বর অজ্ঞাত পরিচয় এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মরদেহটি হাসির বলে শনাক্ত করে দাফন করেন তার মা-বাবা। দাফনের পাঁচ দিন পর গতকাল সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) হাসি বেগমকে ময়মনসিংহের নান্দাইল থেকে আটক করেছে সদরপুর থানা পুলিশ।

এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ৮ বছর আগে একই উপজেলার চরবিষ্ণুপুর ইউনিয়নের বড় বাড়ির মৃত শাহ আলম শেখের ছেলে মোতালেব শেখের সঙ্গে বিয়ে হয় হাসি বেগমের। তাদের সাত বছর বয়সী একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। গত ৭ সেপ্টেম্বর হাসি বেগম বিদ্যুৎ বিল দেওয়ার কথা বলে শ্বশুরবাড়ি থেকে বের হন। এরপর থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন।

আরও পড়ুন >  ‘গুম’ করা বাবাকে ফিরিয়ে এনেছেন অভিযুক্ত ৪ ছেলে

এ ঘটনায় হাসি বেগমের বাবা শেখ হাবিবুর রহমান গত ১১ সেপ্টেম্বর সদরপুর থানায় একটি অভিযোগ করেন। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, তার মেয়ে হাসি বেগমকে হত্যা করে মরদেহ গুম করেছেন জামাতা মোতালেব শেখ। 

এর দুইদিন পর ১৪ সেপ্টেম্বর হাসি বেগমের স্বামী মোতালেব শেখ সদরপুর থানায় পাল্টা আরেকটি অভিযোগ করেন। ওই অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, হাসি বেগম নগদ টাকাসহ প্রায় ১০ লাখ টাকার মালামাল নিয়ে বাবার বাড়িতে পালিয়ে গেছেন।

আরও পড়ুন > ২৮ বছর পর কবর খুঁড়ে মিলল ‘অক্ষত’ মরদেহ

এর মধ্যে গত ২০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় ভাঙ্গা উপজেলার মানিকদহ ইউনিয়নের আদমপুর এলাকার নাউটানা এলাকায় কচুরিপানার ভেতর থেকে এক নারীর অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরবর্তীতে নিখোঁজ হাসি বেগমের মা সালমা বেগম মরদেহ হাসি বেগমের বলে শনাক্ত করেন। এরপর ময়নাতদন্ত ও আইনগত প্রক্রিয়ার পর শৌলডুবী মদিনাতুল কবরস্থানে ওই মরদেহ দাফন করা হয়। তবে দাফনের পাঁচ দিন পর হাসি বেগম জীবিত ফিরে আসায় জানা গেল মরদেহটি তার ছিল না। এটা অজ্ঞাত পরিচয় এক নারীর মরদেহ। তবে পুলিশ ওই মরদেহটি কার তা জানাতে পারেনি।

গতকাল সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সদরপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ময়মনসিংহের নান্দাইল থেকে হাসি বেগমকে আটক করে সদরপুর নিয়ে আসেন।

আরও পড়ুন > একসঙ্গে মা ও দুই ছেলের জানাজা, পাশাপাশি কবরে দাফন

এ বিষয়ে জনতে চাইলে সদরপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মামুন আল রশিদ বলেন, হাসি বেগম এক ছেলের সঙ্গে পালিয়ে গিয়েছিলেন। তার মা বাবা মরদেহ শনাক্ত করতে ভুল করেছিলেন।  ময়মনসিংহের নান্দাইল এলাকা থেকে হাসি বেগমকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরামর্শ করে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জহির হোসেন/আরএআর