সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে আবু সাঈদ হত্যা মামলায় একই পরিবারের চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সিরাজগঞ্জের অতিরিক্ত দায়রা জজ (২য় আদালত) আদালতের বিচারক মো. আবুল বাশার মিঞা এই রায় দেন।

অতিরিক্ত দায়রা জজ (২য় আদালত) আদালতের অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি (অতিরিক্ত পিপি) জেবুন্নেছা (জেবা রহমান) এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, মামলার চার আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আট আসামিকে বেকসুর খালাস প্রদান করা হয়েছে।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- শাহজাদপুর উপজেলার টেকুয়াপাড়া গ্রামের তাজের ফকিরের ছেলে আব্দুস সালাম ও তার ছেলে আজিজুল ইসলাম এবং আব্দুস সালামের ভাই আবুল কালাম ও তার ছেলে বোরহান উদ্দিন।

বেকসুর খালাস পাওয়া আসামিরা হলেন- শাহজাদপুর উপজেলার টেকুয়াপাড়া গ্রামের মহসীন রেজা, আব্দুস কুদ্দুস, তয়জাল, আলেয়া বেগম, ময়না খাতুন, রেখা খাতুন, বুলবুলি খাতুন ও ইদ্রিস আলী।

মামলা সূত্রে জানা যায়, শাহজাদপুর উপজেলার টেকুয়াপাড়া গ্রামের আব্দুস সালামের সঙ্গে প্রতিবেশী জাহাঙ্গীর আলমের বাড়ির সীমানা প্রাচীর নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এই বিরোধের জেরে ২০০৫ সালের ২২ এপ্রিল বিকেলে আসামিরা লাঠিসোঁটা ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে জমায়েত হয়। এ সময় আসামিরা জোরপূর্বক বাড়ির সীমানার প্রাচীর সরাতে গেলে জাহাঙ্গীর আলমের লোকজন বাধা দেন। এতে আসামিরা তাদের পিটিয়ে আহত করেন। পরে তারা জাহাঙ্গীরের বাবা আবু সাঈদের ওপর হামলা করে। এতে বেশ কয়েকজন আহত হন। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে সিরাজগঞ্জের একটি বেসরকারি হাসপাতালে (মঈন উদ্দিন মেমোরিয়াল হাসপাতাল) ভর্তি করেন। সেখানে আবু সাঈদের অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে দ্রুত সিরাজগঞ্জ সদর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

এ ঘটনায় নিহতের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে সাতজনের নাম উল্লেখ করে শাহজাদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটির তদন্ত শেষে ১২ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। মামলার দীর্ঘ সাক্ষ্যপ্রমাণ শেষে আদালত আজ এ রায় প্রদান করেন।

শুভ কুমার ঘোষ/এমজেইউ