দেবিদ্বারে সিজারের পাঁচ মাস পর বের হলো গজ
কুমিল্লার দেবিদ্বারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে সিজারিয়ান অপারেশনের প্রায় পাঁচ মাস পর এক নারীর পেট থেকে বের করা হলো গজ (ব্যান্ডেজ)।
পাঁচ মাসে গজটি ওই নারীর পেটে থাকায় তাতে পচন ধরে তার জীবন সংকটাপন্ন হয়ে পড়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।
বিজ্ঞাপন
সূত্র জানায়, গত বছর ৫ নভেম্বর রাত ১১টার পর মুরাদনগর উপজেলার মোগসাইর গ্রামের মো. রাসেল মিয়ার স্ত্রী মোসা. শারমিন আক্তার (২৫) দেবিদ্বারের আল ইসলাম হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়গনস্টিক সেন্টারে ভর্তি হন। কর্তব্যরত চিকিৎসক রোজিনা আক্তার তাকে দেখে জরুরি সিজার করতে পরামর্শ দেন। ডাক্তারের পরামর্শে সিজারে সম্মতি দিলে ওই দিনই ডাক্তার রোজিনা আক্তার ও ডা. শামীমা আক্তার লিন্টা তার সিজার করেন। এতে একটি ছেলে সন্তান জন্ম হয়। ৯ নভেম্বর ২০২০ সকালে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়।
অপারেশেনের কিছুদিন পর থেকে তার পেটে ব্যথা ও ক্ষত থেকে পুঁজ বের হতে থাকে। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শারমিনকে কুমিল্লার ময়নামতি ক্যান্টনমেন্ট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ডা. কর্নেল আবু দাউদ মো. শরীফুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল চিকিৎসক তার পেটে অপারেশন করে আস্ত গজ (ব্যান্ডেজ) বের করেন।
বিজ্ঞাপন
শারমিনের বড় ভাই রহুল আমিন জানান, শারমিনের আগেও একটি তিন বছরের মেয়ে সন্তান রয়েছে। তার প্রথম সন্তানও সিজারে হয়েছে। দ্বিতীয় সন্তান প্রস্রবে সিজার করার পর থেকে তার পেটে অনেক ব্যথা ও পুঁজ পড়তে থাকে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত গাইনি চিকিৎসক ডা. রোজিনার সঙ্গে মোবাইল ফোনে বুধবার (৭ মার্চ) সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
আল ইসলাম হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়াজ মোহাম্মদ হোসেন এনাম বলেন, রোগীর পেটে গজ থেকে যাওয়ার বিষয়টি আমরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানতে পারি। ঘটনাটি পাঁচ মাস আগের। এরপর রোগীর স্বজনরা আমাদের সঙ্গে আর যোগাযোগ করেনি। এমন ঘটনা ঘটে থাকলে আমরা অনুতপ্ত।
ময়নামতি ক্যান্টনমেন্ট জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. কর্নেল আবু দাউদ মো. শরীফুল ইসলাম বলেন, গতকাল (মঙ্গলবার) সন্ধ্যায় অপারেশনের মাধ্যমে পেট থেকে রক্তাক্ত গজ বের করা হয়। বর্তমানে রোগী সংকটাপন্ন রয়েছে। কয়েক দিন গেলে অবস্থা বোঝা যাবে।
এ বিষয়ে কুমিল্লার ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. শাহাদাৎ হোসেন বলেন, সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও হাসপাতালের নাম উল্লেখ করে স্বজনরা যদি লিখিত অভিযোগ করেন, তাহলে বিষয়টি তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এমএএস