পরকীয়ার অপরাধে ইউপি সদস্যের কারাদণ্ড
জাকির হোসেন সুমন
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার মান্দারী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য জাকির হোসেন সুমনকে (৩৯) পরকীয়ার অপরাধে এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও ১৫ দিনের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) দুপুরে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২ এর বিচারক তারেক আজিজ এ রায় দেন। এ মামলায় স্বপ্না বেগম ও পারভেজ হোসেন নামে দুইজনকে খালাস দেওয়া হয়েছে। আদালতের পেশকার জসিম উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বিজ্ঞাপন
বাদীর আইনজীবী আনোয়ার হোসেন ও রাকিবুল হাসান তামিম জানান, আসামি সুমনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। রায়ের সময় তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে আপিল শর্তে আদালত তাকে জামিন দিয়েছেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত সুমন মান্দারী ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ও দক্ষিণ মান্দারী গ্রামের পাটওয়ারী বাড়ির মৃত রফিক উল্যার ছেলে।
বিজ্ঞাপন
খালাসপ্রাপ্ত স্বপ্না দক্ষিণ মান্দারী গ্রামের মো. মানিকের স্ত্রী ও পারভেজ একই এলাকার গাইনেগো বাড়ির মোস্তফা মিয়ার ছেলে।
মামলার বাদী মো. মানিক দক্ষিণ মান্দারী গ্রামের ওসমান আলী হাজী বাড়ির আবুল কাশেমের ছেলে। তিনি ঢাকায় একটি গার্মেন্টসের শ্রমিক।
মামলার এজাহার সূত্র জানায়, প্রায় ১৫ বছর আগে মানিক ও স্বপ্নার পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। তাদের সংসারে দুটি সন্তান রয়েছে। মানিক অধিকাংশ সময় কর্মস্থল ঢাকায় থাকতেন। সেই সুযোগে ইউপি সদস্য সুমন ও স্বপ্না ফেসবুক ম্যাসেঞ্জার ও মোবাইলফোনে কথা বলতেন। একপর্যায়ে দুইজনের মধ্যে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ঘটনাটি স্থানীয়ভাবে জানাজানি হয়। মানিক ঢাকা থেকে এসে স্ত্রীকে এ নিয়ে বকাঝকা করেন। এগুলো বন্ধ করতে বলেন।
২০২২ সালের ২৩ মার্চ মানিকের ছোট ভাই ব্যবসায়ী রাসেল দোকানের মালামালে কেনার জন্য ঘরের স্টিলের আলমারিতে ৬ লাখ টাকা এনে রাখেন। পরদিন স্বপ্না ওই টাকা এবং বিভিন্ন সময় স্বামীর দেওয়া ৩ ভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে সুমনের সঙ্গে পালিয়ে যান। এতে পারভেজ তাদেরকে সহযোগিতা করেন। এ ঘটনায় ৬ এপ্রিল মানিক বাদী হয়ে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্ত্রী স্বপ্না ও ইউপি সদস্য সুমনসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
২০২২ সালের ৫ মে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপপরিদর্শক (এসআই) নুরুল ইসলাম আদালতে সুমনসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত এ রায় দেন।
মান্দারী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন রুবেল পাটওয়ারী বলেন, রায়ের বিষয়টি আমার জানা নেই। সুমনও বিষয়টি আমাকে জানায়নি।
হাসান মাহমুদ শাকিল/আরএআর