হাফেজ মাহিদুর রহমান

মাত্র সাত মাসে পবিত্র কোরআনের হাফেজ হয়েছেন ১১ বছর বয়সী মাহিদুর রহমান। সাধারণ শিক্ষার্থীদের যেখানে কোরআন হিফজ করতে ৩ থেকে ৪ বছর লেগে যায়, সেখানে মাত্র ৭ মাসেই হাফেজ হওয়ায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন শিক্ষক, সহপাঠী ও স্থানীয়রা। 

হাফেজ মাহিদুর চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার কন্যানগর দারুল উলুম কওমি মাদরাসার ছাত্র ও গোমস্তাপুর উপজেলার বিসুক্ষেত্র গ্রামের আনিসুর রহমানের ছেলে। 

মাহিদুর রহমানের সহপাঠীরা দৈনিক ১-২ পৃষ্ঠা করে কোরআন মুখস্থ করে পড়া দেয় শিক্ষকের কাছে। আর মাহিদুর প্রথমদিকে দৈনিক ৩-৪ পৃষ্ঠা ও পরে ১৫-২০ পৃষ্ঠা করে মুখস্থ পড়া শুনিয়েছে শিক্ষককে। তার এই বিস্ময়কর সাফল্যে খুশি মাদরাসার শিক্ষক ও সহপাঠীরা। তারা বলছেন, দীর্ঘ অভিজ্ঞতায় এতো কম সময়ে হাফেজ হতে দেখার ঘটনা তাদের প্রথম। 

দুই বছর স্থানীয় একটি মক্তবে আমপারা ও কোরআন পড়লেও কোরআন মুখস্থ করার হেফজ বিভাগে গত ৭ মাস আগে ভর্তি হয় মাহিদুর রহমান। মাহিদুর বলেন, নামাজ আর কোরআন পড়া ছাড়া অন্য কাজ করতাম না। আমার শিক্ষকরা আমাকে এ কাজে অনুপ্রেরণা জোগান। বড় হয়ে একজন আলেম হিসেবে দেশ ও জাতির কল্যাণে অবদান রাখতে চাই। এজন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চাই। 

মাহিদুরের সহপাঠী আতিকুল ইসলাম বলেন, শুরুর দিকে মুখস্থ করার দিক থেকে একটু গতি কম ছিল। ধীরে ধীরে তা বেড়েছে। আমরা তাকে দেখে আরও বেশি পড়ার প্রতি আগ্রহ পায়। সে যেমন মেধাবী, একইসঙ্গে বিনয়ী।

কন্যানগর দারুল-উলুম কওমি মাদরাসার সহকারী শিক্ষক মাওলানা মো. মাহমুদ হাসান বলেন, আমার ছাত্র ও শিক্ষকতার জীবনে কোনো শিক্ষার্থীর এমন মেধা দেখিনি। এ মেধা আমরা কাজে লাগিয়েছি। শিক্ষকদের সহযোগিতা নিয়ে মাহিদুর পড়ার প্রতি মনোযোগী হয়েছে। ফলাফলও এসেছে দ্রুত হাফেজ হয়ে। এখন তার শুনানি (রিভিশন) চলছে। 

মাদরাসার প্রধান শিক্ষক মাওলানা আব্দুর রহমান বলেন, একজন শিক্ষার্থীকে কোরআনের হাফেজ হতে আড়াই থেকে তিন বছর সময় লাগে। কিন্তু মাহিদুর রহমানকে আল্লাহ অনেক বেশি মেধা দিয়েছেন। এজন্য সে মাত্র সাত মাসে কোরআনের হাফেজ হয়েছে। আমার ১৪ বছরের ছাত্রজীবন ও ৭ বছরের শিক্ষক জীবনে এমন মেধাবী ছাত্র কোনোদিন দেখেনি। 

কন্যানগর দারুল উলুম কওমি মাদরাসার সভাপতি মো. মোখলেসুর রহমান জানান, মাহিদুর সাত মাসে কুরআনে হাফেজ হয়েছে, এটি আমাদের সবার গর্ব। সারাদেশে এই মাদরাসার সুনাম বয়ে এনেছে মাহিদুর। আল্লাহ প্রদত্ত মেধা বলতে যা বোঝায় তা মাহিদুরকে দেখে বোঝা যায়।

জাহাঙ্গীর আলম/এএএ