জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলায় কলেজছাত্র সৌরভ (১৮) হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। মোবাইল ফোনে ধারণ করা কিছু অশ্লীল ভিডিওর জেরে সৌরভকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে রিফাত হোসেন (১৯) নামের এক তরুণ। এ ঘটনায় আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। 

রোববার (৮ অক্টোবর) সন্ধ্যায় জয়পুরহাট চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিশীথ রঞ্জন বিশ্বাস রিফাতকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। পাঁচবিবি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল হক ঢাকা পোস্টকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

নিহত কলেজছাত্র সৌরভ (১৮) পাঁচবিবি উপজেলার মোহাম্মদপুর গ্রামের খাজা মিয়ার ছেলে। তিনি সড়াইল আদর্শ কলেজ থেকে এবার এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছেন। গ্রেপ্তার রিফাত হোসেন একই গ্রামের নুর ইসলামের ছেলে।

ওসি জাহিদুল হক বলেন, সৌরভের মোবাইল ফোনে রিফাতের কিছু অশ্লীল ভিডিও ছিল। ওই ভিডিও দিয়ে সৌরভ রিফাতকে ব্ল্যাকমেইল করার চেষ্টা করে। গত ৫ অক্টোবর রাতে মোহাম্মদপুরের ধানখেতের মাঠে তাদের দুজনের মাঝে ভিডিও নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে সৌরভ চিৎকার করার হুমকি দেয়। ওই সময় রিফাত তার গলা চেপে ধরে। ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে সৌরভের হাতে থাকা ছুরিতে তার নিজের বাম হাতের রগ কেটে যায়।

এদিকে রিফাত তার গলা চেপে ধরে থাকায় শ্বাস বন্ধ হয়ে সৌরভ মারা যায়। পরে সেখানে ধানখেতে সৌরভের মরদেহ ফেলে রিফাত বাড়ি চলে যায়। কেউ যাতে ঘটনাটি বুঝতে না পারে সেজন্য রিফাত ছুরি ধানখেত থেকে দূরে ফেলে দেয় এবং সৌরভের মোবাইল ফোন একটি মসজিদের পুকুরে ফেলে দেয়। ওই মোবাইল ও ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে।

ওসি আরও বলেন, এ ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে থানায় একজনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলার আসামি রিফাতকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ৫ অক্টোবর রাতে সৌরভ খাবার খেয়ে নিজ ঘরে ঘুমাতে যায়। রাত ৯টার দিকে রিফাত এসে তাকে মাছ ধরার জন্য ডেকে নিয়ে যায়। পরে রাত ১১টার দিকে সৌরভ বাড়ি না ফেরায় পরিবারের লোকজন তাকে খোঁজাখুঁজি শুরু করে। ওই রাতে রিফাতকে তার বাড়িতে পাওয়া যায় এবং সে বলে সৌরভ বাড়ি ফিরে গেছে। এদিকে পরের দিন ৬ অক্টোবর সকালে ওই এলাকার একটি ধানখেতে বাম হাতের রগ কাটা অবস্থায় সৌরভের মরদেহ পাওয়া যায়।

চম্পক কুমার/আরকে