আটক কর্মচারীরা

নারায়ণগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদীতে যাত্রীবাহী লঞ্চকে ধাক্কা দিয়ে ডুবিয়ে দেওয়া কার্গো জাহাজ ও এর চালকসহ ১৪ কর্মচারীকে নৌ-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে কোস্টগার্ড। বৃহস্পতিবার (০৮ এপ্রিল) সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ নৌ-পুলিশের কাছে জাহাজসহ তাদেরকে হস্তান্তর করা হয়। 

এর আগে দুপুরে শীতলক্ষ্যা নদীতে সাবিতা আল হাসান নামে লঞ্চকে ধাক্কা দিয়ে ডুবিয়ে দেওয়া এসকেএল-৩ কার্গো জাহাজটি মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ার একটি ডকইয়ার্ড থেকে আটক করে কোস্টগার্ড। এ সময় জাহাজের চালকসহ ১৪ কর্মচারীকে আটক করা হয়। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) করা মামলায় তাদেরকে গ্রেফতার দেখিয়েছে নৌ-পুলিশ। 

গ্রেফতাররা হলেন- জাহাজের মাস্টার ওহিদুজ্জামান, চালক মজনু মেল্লা, সুকানি আনোয়ার মল্লিক, নাজমুল মোল্লা, গ্রিজার ফারহান মোল্লা, হৃদয় হাওলাদার, ডেক টেন্টাইল মে.আব্দুল্লাহ, লস্কর রাজিবুল ইসলাম, নূর ইসলাম, মো. সাগর, সাকিব সরদার, মো. আফসার, আলিম শেখ ও বাবুর্চি বাশার শেখ । 

নারায়ণগঞ্জ নৌ-পুলিশের পুলিশ সুপার মীনা মাহমুদা ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিআইডব্লিউটিএর মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। এমভি এসকেএল-৩ নামে জাহাজটি জব্দ করা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত রোববার (০৪ এপ্রিল) লঞ্চডুবির ঘটনার পরপরই কার্গো জাহাজটি মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় শীতলক্ষ্যা নদীর ওপর নোঙর করা হয়। পরদিন সকালে জাহাজটিকে নদীর ওপর নোঙর করা অবস্থাতেই রঙ করা শুরু হয়। লঞ্চ দুর্ঘটনার বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় এবং নিহতদের বেশিরভাগ মুন্সিগঞ্জের হওয়ায় জাহাজটি আশপাশের ডকইয়ার্ডে প্রবেশ করানোর চেষ্টা করা হয়নি। কেউ যাতে বিষয়টি টের না পায় সেজন্য নদীর ওপরই রঙ করানো হয় জাহাজটিকে। 

কোস্টগার্ডের পাগলা স্টেশনের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট আশমাদুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, যাত্রীবাহী লঞ্চটিকে ধাক্কা দেওয়ার পর দ্রুত কার্গো জাহাজটি মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় চলে যায়। কার্গোটি গজারিয়ার কোস্টগার্ড স্টেশনের কাছাকাছি নোঙর করা ছিল। কার্গোটি জাহাজটির রঙ বদলে ফেলা হয়েছে। সেখানে অভিযান চালিয়ে এসকেএল-৩ নামে কার্গো জাহাজটি আটক করা হয়। এ সময় কার্গোটির চালকসহ আটক ১৪ জনকে করা হয়।

এর আগে কার্গো জাহাজের ধাক্কায় যাত্রীবাহী লঞ্চডুবিতে ৩৪ জনের মৃত্যুর ঘটনায় কার্গোর চালকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা করে বিআইডব্লিউটিএ। গত মঙ্গলবার (০৬ এপ্রিল) রাত ১১টার দিকে নারায়ণগঞ্জ বন্দর থানায় হত্যার অভিযোগ এনে মামলাটি করেন বিআইডব্লিউটিএ নারায়ণগঞ্জ কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক (নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা) বাবুলাল বৈদ্য। হত্যার উদ্দেশ্যে বেপরোয়া গতিতে পণ্যবাহী কার্গোটি চালিয়ে লঞ্চটি ডুবিয়ে ৩৪ জনের প্রাণহানি ঘটানো হয়েছে বলে অভিযোগে বলা হয়।

অপরদিকে গত বুধবার (০৭ এপ্রিল) সারাদিন থানায় থানায় ঘুরেও মামলা করতে পারেনি ডুবে যাওয়া লঞ্চ এমএল সাবিত আল হাসানের মালিকপক্ষ। নারায়ণগঞ্জ নৌ থানা ও বন্দর থানায় লঞ্চের মাস্টার বাদী হয়ে মামলা করতে গেলে পুলিশ তাদের ফিরিয়ে দেয় অভিযোগ মালিকপক্ষের। 

রাজু আহমেদ/আরএআর