কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় রঞ্জন (২৬) নামে এক অটোরিকশা চালকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি পর পর দুইটি অটোরিকশা চুরি হওয়ায় আত্মহত্যা করেছেন।

শনিবার (১৪ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে উপজেলার চন্ডিপাশা ইউনিয়নের বড় আজলদী গ্রামে নিজ বাড়িতে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। রঞ্জন বড় আজলদী গ্রামের হাজী বাড়ির মৃত শাহাব উদ্দিনের ছেলে।

রঞ্জনের মরদেহ পাশে একটি চিরকুট পাওয়া গেছে। যাতে লিখা ছিল, ‘আমার অটো গাড়ি চুরি হয়ে গেছে তাই আমি আত্মহত্যা করেছি। তাই আমার মারে কেউ কষ্ট দিবেন না দয়া করে। মা তোমার দাবি আমি দিতে পারলাম না!’

প্রতিবেশী আশরাফুল ইসলাম বাবর বলেন, নিহত রঞ্জনের বাবা আনুমানিক ১০ বছর আগে মারা গেছেন। তার ছোট ভাইয়ের বয়স ১১ বছর। দীর্ঘদিন যাবৎ মা অসুস্থ থাকায় বড় ছেলে রঞ্জনই ছিল পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তাদের বাড়ির ভিটা ছাড়া আর কোনো সম্পত্তি নেই। কিছুদিন আগে তার একটি অটোরিকশা চুরি হয়। পরবর্তীতে ঋণ নিয়ে সে আরও একটি অটোরিকশা কেনে। সেটিও শনিবার সকালে পাকুন্দিয়া কিশোরগঞ্জ রোড থেকে সেটাও চুরি হয়ে যায়। দেনা করে অটোরিকশাটি কিনে ছিল যার টাকা এখনো পরিশোধ করতে পারেনি। কীভাবে এই টাকা পরিশোধ করবে সেই ভয়ে সে আত্মহত্যা করেছে। 

তিনি আরও বলেন, শনিবার আনুমানিক দুপুর ১টার দিকে অটোরিকশা চুরির পর সে বাড়িতে ফিরে আসে। তখন তার মা গাড়ির কথা জিজ্ঞেস করলে সে বলে, গাড়ি নষ্ট হওয়ায় গেরেজে দিয়েছে মেরামত করতে। তখন মা তাকে বলছিল গোসল করে খেতে বললেও সে না খেয়ে যেই ঘরে অটোরিকশাটি চার্জ দেওয়া হয় সেই ঘরে যায়।  সন্ধ্যার সময় ডাকাডাকি করেও তার সাড়া না পাওয়ায় দরজা ভেঙে ঘরে ডুকে তার ঝুলন্ত মরদেহ পাওয়া যায়। তার মরদেহ পাশেই ওই চিরকুটটা পাওয়া যায়। 

পাকুন্দিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাহিদ হাসান সুমন এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, মরদেহ ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এসেছে। থানায় একটি ইউডি মামলা হয়েছে। তারপর মৃত্যুর সঠিক কারণ জানার জন্য শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে।

আরকে