নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার ডাকাতি, অপহরণ ও অস্ত্র মামলায় ৮৪ বছরের সাজাপ্রাপ্ত এবং একাধিক মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক আসামি মো. মনির উদ্দিনকে (৪০) গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র‍্যাব-১১ এর সদস্যরা।

গতকাল মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) রাতে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সদর উপজেলার হাসপাতাল সড়ক থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত মনির উদ্দিন নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলার পশ্চিম মাইজছড়া গ্রামের হাজী আব্দুল মোতালেবের ছেলে।

র‍্যাব-১১ সূত্রে জানা যায়, আসামি মো. মনির উদ্দিন পেশায় একজন জলদস্যূ ও অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী। তিনি ও তার বাহিনীর সদস্যরা উপকূলবর্তী এলাকায় ডাকাতি, চাঁদাবাজী, অপহরণ, দাঙ্গা-হাঙ্গামাসহ বিভিন্ন ধর্তব্য অপরাধের সঙ্গে জড়িত। উপকূলবর্তী এলাকার লোকজন তাদের সন্ত্রাসী কার্যকলাপে সর্বদা আতঙ্কগ্রস্ত থাকে। তার নেতৃত্বে নোয়াখালীর হাতিয়া, চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ ও ভোলার উপকূলবর্তী এলাকায় জেলেদের অপহরণ করতো। মুক্তিপণ আদায় করে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে আসছিল। উপকূলের লোকজন তাদের এমন কার্যকলাপে বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার সাহস করতো না। কেউ প্রতিবাদ করলে তার বাহিনীর লোকজন দ্বারা মারধরসহ নানান রকমের নির্যাতন করতো। তার বিরুদ্ধে ভোলার মনপুরা ও চরফ্যাশন থানায় ডাকাতি, অপহরণ ও অত্র আইনে একাধিক মামলা রয়েছে। এসব মামলায় তিনি ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক আসামি। দীর্ঘ বিচারিক কার্যক্রম শেষে বিজ্ঞ আদালত এসব মামলায় মনির উদ্দিনকে দোষী সাব্যস্ত করে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন মেয়াদে মোট ৮৪ বছর সাজা পরোয়ানা ইস্যু করেন। 

র‍্যাব-১১, সিপিসি-৩ এর আভিযানিক দল মনির উদ্দিনকে গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা কার্যক্রম আরম্ভ করে। পরবর্তীতে র‍্যাব-১১, সিপিসি-৩ এর একটি বিশেষ আভিযানিক দল মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) রাতে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সদর উপজেলার হাসপাতাল সড়ক থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে।

র‍্যাব-১১ এর সিপিসি-৩ এর নোয়াখালী ক্যাম্পের কোম্পানি অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মাহমুদুল হাসান ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তথ্য প্রযুক্তির সহযোগিতায় অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। 

জলদস্যু নেতা মনির উদ্দিন ভোলার মনপুরা থানার ডাকাতি মামলায় ৩২ বছরের সাজাসহ বিভিন্ন মামলায় মোট ৮৪ বছরের সাজাপ্রাপ্ত। রায় ঘোষণার পর থেকে আসামি সাজা এড়াতে গা ঢাকা দেয়। তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য হাতিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়। বুধবার (১৮ অক্টোবর) বিকেলে আসামিকে নোয়াখালীর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হবে।

হাসিব আল আমিন/এমএএস