ত্রিপুরাদের ঐতিহ্যবাহী পোশাকে দেবী দুর্গা
খাগড়াছড়িতে চলছে শারদীয় দুর্গাপূজার সর্বাত্মক প্রস্তুতি। এবার জেলা শহর ও ৯ উপজেলার ৬০টি মণ্ডপে চলবে দেবীর আরাধনা। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের পাশপাশি ত্রিপুরা জনগোষ্ঠী একই ধর্মে বিশ্বাসী হওয়ায় উৎসবে রয়েছে বাড়তি মাত্রা। এখন মণ্ডপগুলোতে চলছে প্রতিমা তৈরির শেষ মুহূর্তের কাজ। মৃৎ শিল্পীদের হাতের নিঁপুণ ছোঁয়ায় দেবী দুর্গার বিমূর্ত অবয়ব ফুটে উঠেছে।
সারাদেশের সঙ্গে তাল না মিলিয়ে এবার ভিন্ন সাজে দেবী দুর্গাকে তাদের নিজস্ব পোশাকে সাজিয়েছে ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের লোকজন। দেবী দুর্গাকে শাড়ি না পরিয়ে তারা পরিয়েছে তাদের ঐতিহ্যবাহী রিনাই রিসা ও গহনা।
বিজ্ঞাপন
খাগড়াছড়ি জেলা শহরের খাগড়াপুর এলাকার অখণ্ড মণ্ডলি মন্দিরের আয়োজনে এই চিত্র ফুটিয়ে তুলেছেন নিজস্ব সম্প্রদায়ের মানুষের মাঝে। দেবী দুর্গাকে নিজেদের পোশাকে সাজানো দেখে খুশি ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের লোকজন। দুর্গোৎসবকে সামনে রেখে শিশু-কিশোর, কিশোরীরাও উল্লসিত। উৎসবের আমেজ ছোট-বড় সবার মধ্যে।
পূজার সময় যতোই ঘনিয়ে আসছে ততোই ব্যস্ততা বাড়ছে হিন্দু ধর্মাবলম্বী ও পাহাড়ের ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর মাঝে। খাগড়াছড়ির পূজা মণ্ডপগুলোতে দেবী দূর্গাসহ প্রতিমা তৈরির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। মৃত শিল্পীরা মাটিতে দুর্গা দেবীর সৌন্দর্যময় অবয়ব ফুটিয়ে তুলতে রংয়ের আচড় দিচ্ছেন। ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী পোশাক রিনাই রিসাইতে ভিন্ন রুপে দেবী দুর্গাকে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে। তাতে রং তুলির ছোঁয়াও লেগেছে। এতে খুশি আয়োজকরাও।
বিজ্ঞাপন
অখণ্ড মণ্ডলি দুর্গাপূজা কমিটির সভাপতি বলিন্দ্র ত্রিপুরা বলেন, আমরা প্রতিবছরই পূজা পালন করে থাকি। এইবার ত্রিপুরা নারীদের পোশাক রিনাই-রিসা দিয়ে দুর্গা মাকে সাজিয়েছি। এইবার আমাদের পূজা মণ্ডপে যে দর্শনার্থীরা আসবে তারা খুব মজা পাবে।
অখণ্ড মণ্ডলি পূজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক চামেলি ত্রিপুরা জানান, ত্রিপুরা নারীদের ঐতিহ্যেবাহী নিজেদের সাজে এইবার দুর্গা মাকে সাজিয়েছে। দুর্গা মা যেহেতু নারী তাই এমন চিন্তা থেকেই রিনাই রিসা দিয়ে সাজানো হয়েছে। দুর্গা মণ্ডপ সাজানো হয়েছে ত্রিপুরাদের ঐতিহ্য মাচাং ঘর করে। পুরো পূজা গিরে আমাদের মণ্ডপে ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের ঐতিহ্য দিয়ে সাজানো হয়েছে। আশা করি এই পূজায় ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের লোক তাদের ঐতিহ্য ফিরে পাবে।
খাগড়াছড়ি জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক তরুণ কুমার ভট্টাচার্য্য বলেন, এ বছর খাগড়াছড়িতে ৬০টি মন্ডপে দূর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হবে। সকল ধর্মাবলম্বীদের অংশগ্রহণে উৎসবমুখর পরিবেশে পূজা উযাপন করবে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। পূজা সম্পাদনের জন্য আমাদের পূজা কমিটির পক্ষ থেকে সকল ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। আশা করি এইবারের পূজা সুন্দরভাবে পালন করতে পারব।
খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার মুক্তা ধর বলেন, সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়টিও গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে। আমাদের পুলিশ সদস্যরা পূজা মণ্ডপে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে। সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারি থাকবে বিভিন্ন পয়েন্টে। আশা করি নিরাপত্তার কোনো কমতি থাকবে না।
জাফর সবুজ/আরকে