নিহত বিজয় বাসফোরের মা রেখা রানীর আহাজারি

রংপুরের তারাগঞ্জে ভাবিকে অন্যের সঙ্গে ঘোরাঘুরি করা নিয়ে তর্কে ভাইয়ের হাতে ভাই খুন হয়েছেন। গতকাল শনিবার (২১ অক্টোবর) রাত ১১টার দিকে উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের তারাগঞ্জ বাজার মেথরপট্টিতে এ ঘটনা ঘটে। 

নিহত বিজয় বাফসোর ইকরচালী উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচ্ছন্ন কর্মী ছিলেন। জ্যোঠাতো ভাই মানিক বাসফোর তার গলায় বার্মিজ চাকু দিয়ে ছুরিকাঘাত করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। 

পুলিশ ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, মালুয়া বাসফোরের ছেলে বিজয় বাসফোর ও জগদীশ বাসফোরের ছেলে মানিক বাসফোর সর্ম্পকে চাচাতো-জ্যোঠাতো ভাই। বিজয় ও মানিকের সর্ম্পক খুব গাঢ়। তারা একসঙ্গে ঘোরাফেরা করতো। বিজয় বাসফোর উপজেলার ইকরচালী উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচ্ছন্নকর্মী ছিলেন। 

বিজয়ের বাবা মালুয়া বাসফোর অভিযোগ করেন, চাকরির প্রথম বেতন পাওয়ার পর বিজয় পূজার কেনাকাটা করার জন্য গতকাল শনিবার দুপুরে পার্শ্ববতী নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর পৌরসভার একটি মার্কেটে যান। সেখানে দেখতে পান মানিকের স্ত্রী পারুল রানী অন্য পুরুষের সঙ্গে ঘুরাফেরা করছেন। বাড়িতে ফিরে এ কথা মানিককে জানান বিজয়। বিষয়টি নিয়ে মানিক ও তার স্ত্রী পারুল রানীর মধ্যে তর্কের সৃষ্টি হয়। রাত ১১টার দিকে বিজয়কে বাড়ির উঠান বিষয়টি নিয়ে কথা বলার জন্য ডাকেন মানিক। কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে সেখানেই বার্মিজ চাকু বিজয়ের গলায় ঢুকিয়ে দেন মানিক। পরে বিজয়কে মাইক্রোবাসযোগে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাত সাড়ে ১১টায় মারা যান তিনি। 

বিজয় বাসফোরের মা রেখা রানী আহাজারি করে বলছিলেন, ‘ছেলেটা কি অপরাধ করছে। সে তো মার্কেটে যা দেখছে তাই বলছে। ওদের মধ্যে তো ভালো সর্ম্পক ছিল। কেমন করে ছেলেটারে আমার মাইরা ফেলাল।’ এ বিষয়ে কথা বলার জন্য মানিক বাসফোরের বাড়িতে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি।

মানিকের স্ত্রী পারুল রানী বলেন, আমি সৈয়দপুরে একটি বিউটি পার্লারে গিয়েছিলাম। অন্য ছেলের হাত ধরে ঘোরার অভিযোগ সঠিক না। রাত সাড়ে ১০টার দিকে আমাদের বাড়িতে চারজন আত্মীয় এসেছিল। ওই সময় মানিকও বাড়িতে ছিল। মানিকের উপস্থিতিতে তার চার বন্ধুকে বিজয় অপদস্থ করে বের করে দেয়। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে ঝগড়া হয়। 

তারাগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ মিঞা বলেন, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। 

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/এএএ