বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে এক বৃদ্ধের কাছ থেকে প্রায় তিন লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে চার জনের বিরুদ্ধে যশোর আদালতে মামলা হয়েছে। সোমবার (২৩ অক্টোবর) চৌগাছার দক্ষিণসাগর গ্রামের বৃদ্ধ খায়রুল ইসলাম এ মামলা করেছেন।

জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইমরান আহম্মেদ অভিযোগের তদন্ত করে পিবিআইকে প্রতিবেদন জমা দিতে আদেশ দিয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদীর আইনজীবী সাজ্জাদ হোসেন পাপ্পু।

আসামিরা হলেন– যশোর সদরের কাশিমপুরের সেতু ও তার স্ত্রী খাদিজা খাতুন ওরফে সাথী খাতুন এবং তার শাশুড়ি চৌগাছার যোগীপাড়ার চান্দিনা বেগম, হাশিমপুরের মকবুল হোসেনের ছেলে হাফিজুর রহমান।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, বৃদ্ধ খায়রুল ইসলামের স্ত্রীর মৃত্যুর কয়েক বছর পর তিনি দ্বিতীয় বিয়ের আগ্রহ প্রকাশ করেন। ফলে পারিবারিকভাবে বিভিন্ন জায়গায় মেয়ে দেখা চলছিল। এর মধ্যে যোগীপাড়ার চান্দিনা বেগম ঘটক সেজে মেয়ে দেখার প্রস্তাব দেন। তার প্রস্তাবে রাজি হয়ে চলতি বছরের ২০ আগস্ট যশোর শহরে এসে চান্দিনা বেগম ঘটকের মাধ্যমে সাথী খাতুন নামে এক মেয়েকে দেখে যান তিনি। এরপর সাথী খাতুন তার মোবাইল নম্বর নিয়ে প্রায় সময়ই কথা বলতেন। সাথীর কথায় আকৃষ্ট হয়ে বৃদ্ধ খায়রুল ইসলাম তাকে বিয়ে করবেন বলে ঠিক করেন। সাথী খাতুন তাকে বিয়ে করতে রাজি আছে বলে বিভিন্ন সময়ে নানা অজুহাতে বিকাশের মাধ্যমে ২ লাখ ১৬ হাজার ৪৯০ টাকা খায়রুল ইসলামের কাছ থেকে হাতিয়ে নেন। তারপরও সাথী খাতুন তার সঙ্গে বিয়ের দিন ধার্য করে ফেলে।

গত ৫ অক্টোবর সাথী খাতুন বিয়ে করতে তাকে শহরের পালবাড়ি মোড়ে আসতে বলে। খায়রুল ইসলাম ঘরোয়াভাবে বিয়ের আয়োজন বলে একজনকে সঙ্গে নিয়ে বিকেলে পালবাড়ি মোড়ে আসেন। এরপর সাথী খাতুন ফোন করে জানান তার মামার বাড়িতে বিয়ে হবে, তাই দুই জন গিয়ে তাদের নিয়ে আসবে। কিছুক্ষণ অপেক্ষার পর আসামি সেতু ও হাফিজুর তাদের নিয়ে একটি অপরিচিত বাড়িতে আটকে রেখে মারধর করে সঙ্গে থাকা ৫০ হাজার টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে তাড়িয়ে দেয়।

পরে ভুক্তভোগী বৃদ্ধ খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন ঘটক চান্দিনা বেগমের নিজের মেয়ে খাদিজা খাতুনকে প্রতারণার উদ্দেশে পাত্রী সাজিয়ে বিয়ের কথা বলে প্রায় তিন লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। বিষয়টি মীমাংসার জন্য গত ১৭ অক্টোবর হাশিমপুর গ্রামের সবুর হোসেনের মাধ্যমে সালিশের আয়োজন করলে আসামিরা প্রতারণার বিষয়টি স্বীকার করলেও টাকা ফেরত দিতে অস্বীকার করায় বৃদ্ধ খায়রুল ইসলাম আদালতে এ মামলা করেছেন।

বাদী পক্ষের আইনজীবী সাজ্জাদ হোসেন পাপ্পু জানান, খায়রুল ইসলাম নামে এক বৃদ্ধ বিয়ের প্রলোভনে পড়ে প্রতারণার শিকার হয়ে যশোর আদালতে চার জনের বিরুদ্ধে ৩ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে মামলা করেছেন। জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইমরান আহম্মেদ অভিযোগের তদন্ত করে পিবিআইকে প্রতিবেদন জমা দিতে আদেশ দিয়েছেন।

এ্যান্টনি দাস অপু/এসএসএইচ