বাবুল আকতার

একসঙ্গে ১৮ কেজি মাংস ও ১০০টি ডিম খেয়েছেন ভোজনরসিক বাবুল আকতার। নিমিষেই তিনি ২০-২৫ কেজি ওজনের কাঁঠাল একাই খেতে পারতেন। তার খাওয়া দেখে অবাক হতেন সবাই। শুধু খাওয়া নয়, ১১ মণ ওজনের কাঠের গুঁড়ি একাই কাঁধে তুলে বহন, এক দৌড়ে ১৫ কিলোমিটার রাস্তা অতিক্রম, টানা চার ঘণ্টা সাঁতার তার কাছে ছিল স্বাভাবিক ব্যাপার। বাবুল ১২৫ কেজি ওজনের বিশাল দেহ নিয়ে উঠতেন ডাব গাছেও। নিজের এমন ব্যতিক্রম নানান কাজের জন্য গণমাধ্যমের শিরোনামেও এসেছেন কয়েকবার।

গতকাল সোমবার (২৩ আক্টোবর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে নিজ বাড়িতে বাবুল আকতার মারা গেছেন। হৃদরোগে তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে বাবুলের বয়স হয়েছিল ৫০ বছর। তিনি বাঘা উপজেলার মনিগ্রাম ইউনিয়নের গঙ্গারামপুর গ্রামের মৃত খেলাফত উল্লাহ সরকারের ছেলে। মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) সকাল ১০টার দিকে বাঘার গঙ্গারামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হয়। 

পরিবারের সদস্যরা জানান, তিনি দীর্ঘদিন ধরে বাত ও ব্যথার রোগে ভুগছিলেন। একমাস আগে শারীরিক পরীক্ষায় তার কিডনিতে সমস্যা ও হৃদরোগ ধরা পড়ে। এতে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন বাবুল।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বাবুল আকতারের পরিবার সম্পদশালী ছিল। তাদের অনেক জায়গা জমি ছিল। বাবুল নিজেদের জমিতে চাষাবাদ ও সাংসারিক কাজ করতেন। তিনি অন্যের কাজে যেতেন না। বাবুল খেতে পারতেন ভালো। এনিয়ে এলাকায় তার সুনাম রয়েছে। খাওয়ার দিকে থেকে সবাই বাবুলকে এক নামে চেনে। বাবুল জমি বিক্রি করেছেন আর খেয়েছেন। তিনি অনেক জমি বিক্রি করেছেন। 

বাবুলের ছেলে নবাব আলী বলেন, ২০০৫ সালে বন্ধুদের সঙ্গে ঢাকায় গিয়েছিলেন বাবা। ধানমন্ডির ভূত রেস্তোরাঁর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বন্ধুদের সঙ্গে বাজি ধরে অনেক মানুষের সামনে ১৮ কেজি খাসির মাংস এবং ১০০ ডিম এক টেবিলে বসে খেয়েছিলেন। সেখানে উপস্থিত লোকজন ও মিডিয়া কর্মীরা অবাক হয়েছিলেন বাবার খাওয়া দেখে। বিভিন্ন গণমাধ্যমে ভোজনরসিক নামে সংবাদ প্রচার হয়েছিল।

মনিগ্রাম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম বলেন, বাবুল আকতারের অনেক জমি ছিল। বিক্রি করতে করতে এখন বেশি নেই। বাবুল সাংসারিক কাজ ছাড়া অন্য কোনো কাজ করতেন না। এলাকায় বাবুলকে এক নামে সবাই চেনে। তিনি বেশি খেতে পারে বলে। তবে শারীরিক বিভিন্ন সমস্যার কারণে বাবুলের পরিবার খাওয়া কমিয়ে দিয়েছিল। সোমবার রাতে বাবুলের মৃত্যু হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, এলাকার যুবকরা তাকে বাজি ধরে খাইয়েছে। এছাড়া তিনি বাড়িতেও এমনভাবে খেতেন। তার ১৮ কেজি মাংস ও ১০০টি ডিম খাওয়ার বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। দুই বছর আগে একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের লাইভ অনুষ্ঠানে তাকে দেখানো হয়। 

শাহিনুল আশিক/আরএআর