কিশোরগঞ্জের ভৈরবে মর্মান্তিক ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহত এক যুবকের (৩৩) মরদেহ এখনো মর্গে পড়ে আছে। শনিবার (২৮ অক্টোবর)  দুর্ঘটনার ছয় দিন পার হলেও ওই যুবকের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি।

কিশোরগঞ্জের সিভিল সার্জন মো. সাইফুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, কিশোরগঞ্জের শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজের মর্গে মরদেহটি রাখা হয়েছে। গত ছয় দিনে নিহত ওই ব্যক্তির কোনো আত্মীয় বা পরিচিত কেউ মরদেহ শনাক্ত করতে আসেননি।

উল্লেখ্য, গত সোমবার ২৩ অক্টোবর ভৈরব বাজার জংশনের কাছাকাছি জগন্নাথপুর এলাকায় কিশোরগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী এগারসিন্দুর গোধূলি ও ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী মালবাহী ট্রেনের মধ্যে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় সরকারি তথ্যমতে নিহত সংখ্যা ১৯ জনে। আহত হন আরও প্রায় শতাধিক মানুষ। দুর্ঘটনার পর ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-সিলেট ও ঢাকা-কিশোরগঞ্জ তিন পথে সাড়ে সাত ঘণ্টা ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ ছিল।

ঘটনার দিন রাতেই ভৈরব থেকে ১৬ জনের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করে প্রশাসন। ওই দিনই আনুমানিক ৩৩ বছর বয়সী এক যুবকের মরদেহ শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়। এছাড়া দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত একজন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

ভৈরব রেলওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলিম হোসেন শিকদার তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, একজন অজ্ঞাত ব্যক্তির মরদেহ শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। তার পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। 

নিহত ১৯ জন ছাড়াও স্থানীয় সূত্রে দুর্ঘটনায় আরও একজনের মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তিনি হলেন করিমগঞ্জের জয়কা ইউনিয়নের পানাহার গ্রামের মৃত জালাল উদ্দিনের ছেলে ভাঙারি ব্যবসায়ী মো. শফিকুল (৩২)। নিহত শফিকুলের ছোট ভাই সাইফুল ইসলাম বলেছেন, গুরুতর আহত অবস্থায় ভৈরব হাসপাতাল থেকে ময়মনসিংহে নেওয়ার পথে তার ভাই মারা যান। তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি বুঝতে না পারায় প্রশাসনকে না জানিয়ে মরদেহ বাড়ি নিয়ে আসেন। দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তিরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কিছু সহযোগিতা পেলেও তারা পাননি। তার ভাইয়ের তিনটি ছোট ছোট শিশুসন্তান আছে। এই মুহূর্তে মানবিক দৃষ্টিতে প্রশাসন যদি তার পরিবারকে অর্থ সহায়তা করে তাদের অনেক উপকার হবে বলেও জানান।

ভৈরব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাদিকুর রহমান জানান, ট্রেন দুর্ঘটনায় করিমগঞ্জ উপজেলার একজনের মারা যাওয়ার খবর আমি এখনও শুনিনি। বিষয়টি যেহেতু স্পর্শকাতর তাই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে পরবর্তীতে বলা যাবে। যদি এমন হয়ে থাকে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য বলব। তাছাড়া জেলা প্রশাসন থেকে নিহত ব্যক্তিদের সহায়তা করা হচ্ছে। তিনি আরও জানান, মরদেহ হস্তান্তরের সময় প্রাথমিকভাবে দাফন-কাফনের জন্য ২৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে।

আরকে