বাংলাদেশের অপার সম্ভাবনাময় পর্যটন খাত বর্তমানে রাজনৈতিক অস্থিরতায় কিছুটা বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে। দেশে কোনো ধরনের সমস্যা বা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হলে শুরুতেই ধাক্কা লাগে পর্যটন নগরী গুলোতে। বিএনপি-জামায়েতের ডাকা তিন দিনের অবরোধে পর্যটকশূন্য হয়ে পড়েছে পটুয়াখালীর সমুদ্র কন্যা খ্যাত কুয়াকাটা। 

যার ফলে স্থবির হয়ে পড়েছে সকল কর্মকাণ্ড। অলস সময় পার করেছেন পর্যটনশিল্পের সঙ্গে যুক্ত সব ব্যবসায়ীরা। করোনার ধাক্কা কেটে যাওয়ার পর পর্যটনকেন্দ্র কুয়াকাটা প্রাণচাঞ্চল্যতা ফিরেছিল এতোদিনে। পদ্মাসেতুকে আর্শীবাদ মনে করছিল ব্যবসায়ীরা। সেটায় এখন পুরোদমে ভাটা চলছে। পুরো সৈকতে নিরবতা বিরাজ করছে। পর্যটন নির্ভর ব্যবসায়ীদের মাঝে বিরাজ করছে হতাশা। সামনের দিনগুলো কীভাবে কাটবে এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ে গেছেন পর্যটন শিল্পের সঙ্গে থাকা হাজারো ব্যবসায়ী। 

চলতি মাসের ২৮ অক্টোবর বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে কুয়াকাটা সৈকতে কোনো পর্যটকের আনাগোনা ছিল না। এর আগের সপ্তাহে ঘূর্ণিঝড় হামুনের প্রভাবেও কুয়াকাটার পর্যটনশিল্প বাধাগ্রস্ত হয়। সপ্তাহের শুরুতে হরতাল ডাকার পরে একদিন বিরতির পরে আবার শুরু হয়েছে টানা তিনদিনের অবরোধ কর্মসূচি। মৌসুমের শুরুতে এমন খারাপ পরিস্থিতি মোটেই স্বাভাবিকভাবে মেনে নিতে পারছেন না পর্যটন নির্ভর ব্যবসায়ীরা।

সৈকতের ওয়াটার বাইক ব্যাবসায়ী লিটন খান ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার ২২ জন কর্মচারী। ডেইলি হিসেবে আমার ২৫ হাজার টাকা ক্ষতি হচ্ছে। গত কয়েকদিনে আমার লাখ টাকা নেই। এভাবে চলতে থাকলে সামনের দিনগুলো কিভাবে চলবে জানি না। এখন ঋণের বোঝা টানছি। পর্যটক আসতে না পারলে আমাদের না খেয়ে থাকতে হবে। 

হোটেল স্কাই ভিউয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচাল মো. আলমগীর খান ঢাকা পোস্টকে বলেন, গত পাঁচ দিনে চার রুম গেস্ট ছিল আমার হোটেলে। বর্তমানে কোনো বুকিং নেই এবং আজকে এখন পর্যন্ত এক রুমেও গেস্ট নেই।   

ট্যুর অপারেটর এসোসিয়েশন অব কুয়াকাটার (টোয়াক) প্রেসিডেন্ট রুমান ইমতিয়াজ তুষার ঢাকা পোস্টকে বলেন, পর্যটকরা যখন কোনো দর্শনীয় স্থানে বেড়াতে যান তখন সবার আগে তারা যাতায়াত ব্যবস্থার ওপর গুরুত্ব দেন। বর্তমানে দেশের যে পরিস্থিতি তাতে কোন পর্যটকই বেড়ানোর উদ্দেশ্যে বের হবে না। এর প্রভাব কুয়াকাটায়ও পড়েছে। 

হোটেল মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি মোতালেব শরীফ ঢাকা পোস্টকে বলেন, বৈশ্বিক নানা সংকটের মধ্যে রাজনৈতিক অস্থিরতা থাকলে মানুষ ঘর থেকে বের হয় না। গত কয়েক দিন ধরে রাজনৈতিক অস্থিরতায় পর্যটকরা মুখ ফিরেয়ে নিয়েছে। এ সংকট দূর না হলে আমরা পথে বসে যাব।

ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা জোনের পরিদর্শক হাসনাইন পারভেজ ঢাকা পোস্টকে বলেন, কুয়াকাটায় বর্তমানে তেমন বেশি পর্যটকের দেখা মিলছে না। তবে এই পরিস্থিতিতে যারা কুয়াকাটা আসবে তাদের সার্বিক নিরাপত্তায় প্রস্তুত রয়েছে কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশ।

এসএম আলমাস/আরকে