সাতক্ষীরার তালা উপজেলায় সাপের কামড়ে মুশফিকা খাতুন (২০) নামের এক কলেজছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) দিবাগত রাত ৩টার দিকে উপজেলার সুজনশাহ বাজারের ঢ্যামশাখোলা গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত মুশফিকা খাতুন ঢ্যামশাখোলা গ্রামের লতিথ সরদারের মেয়ে। তিনি উপজেলার সদরের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী।

নিহতের মামা সেলিম মোড়ল বলেন, মঙ্গলবার রাতে পড়াশোনা শেষ করে ঘুমাতে যায় মুশফিকা। রাতে বাথরুমে যাওয়ার জন্য বৈদ্যুতিক সুইচ চালু করার সময় তার হাতে সাপ কামড় দেয়। তাৎক্ষণিকভাবে পরিবার ও প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় কবিরাজের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। কবিরাজ তাকে হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন। অ্যাম্বুলেন্সে করে খুলনা মেডিকেলে নেওয়া হলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

কলেজ শিক্ষার্থী মুশফিকার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন মুক্তিযোদ্ধা কলেজের শিক্ষক শিক্ষার্থী সবাই।

মুশফিকার সহপাঠী সুমাইয়া খাতুন বলেন, গতকাল মুশফিকার সঙ্গে কলেজে ক্লাস করেছি। বিকেলে একসঙ্গে প্রাইভেটও পড়েছি। আজকে তার মৃত্যুর খবর মেনে নেওয়া কষ্টকর। কলেজের সব সহপাঠীরা তার মৃত্যুতে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে। মুশফিকা অনেক মেধাবী ছিল। একজন ভালো সহপাঠীর মৃত্যুতে শোকের ছায়া মেনে এসেছে সবার মাঝে।

কলেজের একাধিক শিক্ষক বলেন, একজন মেধাবী শিক্ষার্থীর অকাল মৃত্যু হলো। মুশফিকা অনেক মেধাবী, নম্র-ভদ্র ছিল। শিক্ষকদের খুব সন্মান করত ও পড়াশুনা নিয়ে সব সময় নিজেকে ব্যস্ত রাখত। তার আকস্মিক মৃত্যু মেনে নেওয়া কষ্টের, আমরা একজন মেধাবী ও ভালো শিক্ষার্থী হারালাম।

শিক্ষকরা আরও বলেন, দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা অনেক এগিয়েছে। সাপে কাটলে তাৎক্ষণিকভাবে হাসপাতাল নিয়ে এন্টিভেনাম ইনজেকশন প্রয়োগ করলে বিষক্রিয়া নষ্ট হওয়ার সুযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে সবাইকে সচেতন হতে হবে এবং কবিরাজ ফর্মুলা পরিহার করা উচিত। কবিরাজি ফর্মুলায় সময় দেওয়ার কারণে একজন মেধাবী শিক্ষার্থী হারাতে হল।

তালা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোমিনুল ইসলাম জানান, সাপের কামড়ে মুশফিকা নামে এক কলেজছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। সে মুক্তিযোদ্ধা কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী ছিল। 

সোহাগ হোসেন/এনটি