ফরিদপুরের মধুখালীতে একটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে ১০ বছর আগে চুরি করা টাকা চিঠি লিখে ফেরত দিয়েছেন চোর। বুধবার (১ নভেম্বর) সকালে উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের বাঙ্গাবাড়িয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। 

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মধুখালী উপজেলা রায়পুর ইউনিয়নের বাঙ্গাবাড়িয়া বাজারের পোল্ট্রি ব্যবসায়ী কাইয়ুম মৌলিক। তিনি দীর্ঘদিন বাজারে ব্যবসা করে আসছেন। প্রতিদিনের ন্যায় বুধবার সকালে তিনি দোকানে খুলতে গিয়ে দোকানের সামনে একটা চিঠির খাম দেখতে পান। খামের মধ্যে তিন হাজার টাকা ও একটা চিঠি দেখতে পান। চিঠিতে লেখা ‘আমি প্রায় ১০ বছর আগে আপনার দোকান থেকে ২০০০, ২৫০০, ‍৩০০০ বা ৪০০০ টাকার মতো চুরি করেছিলাম। টাকার পরিমাণ আমার সঠিক মনে নেই। যেহেতু আপনি ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়েন, আপনি অবশ্যই জানেন যে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেন না। ১২-১৩ বছর পর আপনাকে সামান্য টাকাটা দিয়ে আমি আপনার কাছে ক্ষমা চাচ্ছি। জানি এই সামান্য টাকায় আপনার কিছুই হবে না। তাও এই টাকাটা গ্রহণ করে আমাকে আল্লাহর ওয়াস্তে মাফ করে দিন। এই আশায় আপনাকে ৩ হাজার টাকা পাঠালাম। দয়া করে এটি নিয়ে আমাকে ক্ষমা করে দিন।

ব্যবসায়ী কাইয়ুম মৌলিক বলেন, অনেকদিন ধরে দোকান চালাই। বিভিন্ন সময় ছোটখাটো চুরি হয়েছে। তবে এই চুরির ঘটনা আমার সুনির্দিষ্টভাবে মনে নেই।

তিনি বলেন, প্রতিদিনের ন্যায় আজ সকালে দোকান খুলে শার্টারের পাশেই দেখি একটা খাম পড়ে আছে। আমি উঠিয়ে দেখি খামের মধ্যে চিঠির মতো। চিঠিটা খুলে দেখি একটি চিরকুট এবং ৩ হাজার টাকা। আসলে এই মহান ব্যক্তির জন্য আমি মন থেকে দোয়া করি। তিনি সুখে থাক।

কাইয়ুম মৌলিক বলেন, এতদিন পর যে একজন মানুষ তার ভুল বুঝতে পেরেছেন এতেই আমি সন্তুষ্ট। আমি তাকে ক্ষমা করে দিয়েছি, আল্লাহও তাকে যেন ক্ষমা করে দেন।

এ বিষয়ে রায়পুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জাকির হোসেন বলেন, বিষয়টি জানতে পেরেছি। আসলে তিনি চোর হলেও তার শুভ বুদ্ধির উদয় হয়েছে। বিষয়টি আশ্চর্যজনক হলেও সত্য।

তিনি বলেন, এটা সমাজে একটা বার্তা দেয় যে মানুষ একদিন তার অপকর্মের জন্য ভেতরে ভেতরে ঠিকই অনুতপ্ত হয়। কেউ সেটা শুধরানোর সুযোগ পায়, কেউ পায় না।

জহির হোসেন/আরএআর