ক্ষতিগ্রস্ত জমির ধান দেখছেন এক কৃষক

আর কিছুদিন পরেই ধান কাটার কথা, ধানের মৌ মৌ গন্ধে কৃষকের আঙিনা ভরে যাবে। সোনালী স্বপ্ন কৃষকের চোখে। ঠিক এমন সময় কাল বৈশাখী ঝড়ের সঙ্গে গরম বাতাসে সেই স্বপ্ন ভেঙে গেছে কৃষকের। গরম বাতাসে ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। শীষ শুকিয়ে গেছে। এছাড়া গরম বাতাসে ইরি-বোরো ধান গাছ পুড়ে ধূসর রং ধারণ করছে। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা।

জেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, কয়েক হাজার হেক্টর জমির ধানের শীষ সাদা হয়ে গেছে। এতে চরম হতাশায় পড়েছে কৃষকরা। এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছে কৃষি বিভাগ। তাদের মতে কয়েক দিন আগে ঝড়ো-হাওয়া ও বৃষ্টিপাতের সময় গরম হাওয়ার কারণে আগাম জাতের ধানে এ সমস্যা দেখা দিয়েছে।

নলডাঙ্গা উপজেলার পিপরুল ইউনিয়নের কৃষক সামাদ আলী জানান, যে হারে শীষ মরে গেছে তাতে বিঘা প্রতি ধানের ফলন অর্ধেকে নেমে আসবে। 
ছাতনি ইউনিয়নের কানুসগাড়ি বিলের চাষী আব্দুর রহিম জানান, ৫ বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছেন। কিন্তু শীষ মরে যাওয়ায় চরম দুশ্চিন্তায় তিনি। কি করলে এর প্রতিকার হবে জানা নেই তাদের। এর আগে এমন সমস্যায় পড়েননি তারা। কৃষক আব্দুস সাত্তার বলেন, হালসা এলাকার জমিতে ধানের শীষ সাদা হয়ে মরে যাচ্ছে।

গুরুদাসপুর উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের তুলাধুনা বিলের কৃষক আক্কাস আলী জানান, ৭ বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষ করেছেন। যে হারে শীষ মরেছে তাতে উৎপাদন খরচ তুলতে কষ্ট হবে। নাটোর সদর উপজেলার , পণ্ডিত গ্রামের ২৫০ কৃষকের ৪০০ বিঘা জমির ধানের একই অবস্থা। নাটোর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম ঘটনাস্থল পরির্দশন করেছেন।

নাটোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সুব্রত কুমার সরকার ঢাকা পোস্টকে জানান, এভাবে শীষ মরে যাওয়ার ঘটনা আগে কখনও দেখা যায়নি। গরম হাওয়ার কারণে আগাম জাতের ধানে এ সমস্যা দেখা দিয়েছে। পরাগায়নের সময় ঝড়ো বাতাস ও তাপমাত্রা বেশি থাকলে এমন হতে পারে।

কৃষি অফিস সূত্রে জানায়, তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের জন্য জমিতে পানি ধরে রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন তারা। কৃষি বিভাগের তথ্যমতে জেলায় চলতি মৌসুমে প্রায় ৬৩ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়েছে।

তাপস কুমার/ এমআইএইচ