ঠাকুরগাঁওয়ে চালকের গলা কেটে অটোরিকশা ছিনতাই, গ্রেপ্তার ৭
ঠাকুরগাঁওয়ে অটোরিকশাচালক রিফাত হত্যা মামলার রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। অটোরিকশা ছিনতাই করতেই রিফাতকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় মোট সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন মোট চারজন। অটোরিকশা বিক্রি করে প্রাপ্ত ১২ হাজার টাকা থেকে তিন হাজার করে তারা ভাগ পান।
বুধবার (৮ নভেম্বর) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে পিবিআই ঠাকুরগাঁওয়ের পুলিশ সুপার মাহফুজ্জামান আশরাফ এসব তথ্য জানান।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, হত্যার পর রিফাতের মোবাইল ফোনটি নিয়ে যায় ঘাতকরা। সেই ফোনের সূত্র ধরেই একে একে সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর হত্যার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয় গ্রেপ্তারকৃতরা।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- পঞ্চগড় সদর উপজেলার জিয়াবাড়ী সদ্দারপাড়ার হালিম উদ্দিনের ছেলে রবিউল ইসলাম, একই উপজেলার ভূতমারী গ্রামের মৃত আশরাফ চৌধুরী ছেলে কামরুল হাসান, চোর চক্রের সক্রিয় ক্রেতা একই জেলার এরাজ উদ্দিন, জাহাঙ্গীর আলম, আলমগীর হোসেন, অতুল বর্মন ও নাছির উদ্দিন।
বিজ্ঞাপন
পিবিআই জানায়, জীবিকার তাগিদে গত ১৬ অক্টোবর প্রতিদিনের মতো অটোরিকশা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন রিফাত। সকাল ১০টার দিকে শহরের আর্টগ্যালারি থেকে রিফাতের অটোরিকশাটি ভাড়া করে রুহিয়া এলাকায় ঘুরতে যান রবিউল ও কামরুল। পরে সন্ধ্যা হয়ে গেলে আরও একটু ঘুরতে চেয়ে সময় নেন তারা। পূর্বের ভাড়া ৬০০ টাকাসহ আরও ৪০০ টাকা বাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে রুহিয়ার কুজিশহর এলাকায় পথে রওয়ানা হয় তারা। পরে অন্ধকারে নির্জন জায়গায় অটোরিকশাচালক রিফাতের গলায় চুরি চালিয়ে অটোরিকশা নিয়ে পালিয়ে যান তারা। এ ঘটনায় রিফাতের বাবা শহরের গোয়ালপাড়া মহল্লার বাসিন্দা নূর আলম বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন।
গত ৬ নভেম্বর প্রযুক্তির সহযোগিতায় মামলার মূল আসামি রবিউল ইসলাম ও কামরুল হাসানকে পঞ্চগড়ের জলাশী মোড় থেকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই। পরে রবিউল ও কামরুলকে জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেন এবং আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এ সময় তাদের কাছ থেকে রিফাতের মোবাইল ও সিম কার্ড জব্দ করা হয়।
জবানবন্দিতে তারা বলেন, গত ১৬ অক্টোবর সকাল ১০টার দিকে ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে তারা রিফাতের অটোরিকশাটি ভাড়া করেন। পরে রাত ৯টার দিকে রুহিয়া থানার কুজিশহর নামক গ্রামে নিরিবিলি রাস্তা পেয়ে রিফাতের গলায় কামরুল ছুরি চালিয়ে হত্যা করেন।
প্রসঙ্গত, গত ১৭ নভেম্বর ঠাকুরগাঁওয়ের রুহিয়ায় রাস্তার পাশে একটি বাঁশঝাড়ের নিচে অটোরিকশা চালক রিফাতের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর রিফাতের স্ত্রী আশা মনি বাদী হয়ে মামলা করেন। নিহত রিফাত ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার গোয়ালপাড়া গ্রামের নুর আলমের ছেলে।
পরে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে হত্যাকারীদের শনাক্ত করতে সক্ষম হয় পিবিআই। এরপর গত সোমবার ও মঙ্গলবার দিবাগত রাতে পঞ্চগড় জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত দুজন ও ছিনতাইকৃত অটোরিকশা ক্রয় চক্রের সঙ্গে জড়িত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আরিফ হাসান/আরএআর