র্যাবের অভিযানে গ্রেপ্তার ৩
‘যুবলীগ নেতা জাহিদুল হত্যার মূলহোতারা বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মী’
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি জাহিদুল ইসলামের হাত ও পায়ের রগ কেটে হত্যার ঘটনায় জড়িত মূলহোতাদের গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- জয়নাল মিয়া (৩৪), মোজাম্মেল হক (৫০) ও মো. মারুফ মিয়া (২৫)।
এ তিনজন চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী বলে দাবি করছে র্যাব। এদের মধ্যে মারুফ মিয়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি, জয়নাল মিয়া বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য এবং মোজাম্মেল হক জামায়াতকর্মী।
বিজ্ঞাপন
বুধবার (১৫ নভেম্বর) দুপুরে রংপুর নগরের হাজীরহাট উত্তম এলাকায় নবনির্মিত র্যাব সদর দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য নিশ্চিত করেন র্যাব-১৩-এর অধিনায়ক আরাফাত ইসলাম।
গ্রেপ্তার হওয়া আসামিরা বিএনপি-জামায়াতের ডাকা অবরোধ চলাকালীন রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জের ধরে নাশকতার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে যুবলীগ নেতা জাহিদুল ইসলামকে হত্যা করেছে উল্লেখ করে র্যাব-১৩-এর অধিনায়ক বলেন, যুবলীগ নেতা জাহিদুল ইসলামকে বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ জামায়াত ও বিএনপির কিছু দুষ্কৃতকারী হুমকি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছিল। গত ১২ নভেম্বর রাত ১১টার দিকে জাহিদুল মোটরসাইকেলযোগে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বামনডাঙ্গা হতে ছাইতনতলা আসার পথে শাখামারা ব্রিজের ওপরে পৌঁছামাত্র পূর্বপরিকল্পিতভাবে অভিযুক্ত আসামিরা অতর্কিত হামলা করে তাকে এলোপাতাড়ি লোহার রড, চাইনিজ কুড়াল, ধারালো ছুরি দিয়ে আঘাত ও হাত-পায়ের রগ কেটে গুরুতর রক্তাক্ত করে। পরে ওইদিন রাতেই তাকে সুন্দরগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
বিজ্ঞাপন
আরাফাত ইসলাম বলেন, হত্যাকাণ্ডের ঘটনা সংঘটিত করার পরপরই আসামিরা বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপন করে। পরবর্তীতে এলাকাবাসীর সহায়তায় পুলিশ ২৩ জনের নামসহ আরও ১৫-২০ অজ্ঞাতকে আসামি করে সুন্দরগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা রুজু করে। এ ঘটনায় পুলিশ চারজন আসামিকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত ১৪ নভেম্বর অভিযান চালিয়ে সুন্দরগঞ্জের হরিপুর ইউনিয়নের রাঘবচর এলাকা থেকে আসামি জয়নাল মিয়া, রংপুরের পীরগাছা থেকে মোজাম্মেল হক, রংপুর মহানগরী থেকে মারুফ মিয়াকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-১৩-এর অভিযানিক দল।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের তথ্য তুলে ধরে র্যাব-১৩ দাবি করে, আসামি মারুফ মিয়া এই হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী। আসামিরা তাদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ জাহিদুল ইসলামকে হত্যার ছক তৈরি করে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে মারুফ মিয়া পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী ১২ নভেম্বর যুবলীগ নেতা জাহিদুলকে শাখামারা ব্রিজের ওপর নিয়ে আসেন। সেখানে আগে থেকে ওৎ পেতে থাকা মারুফের সহযোগীরা বিভিন্ন ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জাহিদুলকে গুরুতর জখম করে হত্যা করে। গ্রেপ্তারকৃতরা আসামিরা সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া কিছু নাশকতার ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলেও জানান তিনি।
ফরহাদুজ্জামান ফারুক/এমজেইউ