রংপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফর ঘিরে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। সরকার প্রধানকে স্বাগত জানাতে সড়কে নেমেছে মানুষের ঢল। উজ্জীবিত আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীসহ সমর্থকরা।

মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) দুপুরে রংপুর-২ (বদরগঞ্জ-তারাগঞ্জ) আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী আহসানুল হক চৌধুরী ডিউকের নির্বাচনী জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন। তারাগঞ্জ ওয়াকফস্টেট সরকারি কলেজ মাঠে এ জনসভার আয়োজন করা হয়।

সেখান থেকে তিনি সড়ক পথে পীরগঞ্জের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। পীরগঞ্জ যাবার পথে তিনি মিঠাপুকুরের জায়গীর হাটে আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে রংপুর-৫ আসনের প্রার্থী রাশেক রহমানের নির্বাচনী জনসভায় বক্তব্য দেবেন। 

এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মিঠাপুকুরে স্বাগত জানিয়ে সড়কের দুপাশে দাঁড়ান আওয়ামী লীগের মনোনয়নবঞ্চিত স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সদ্য সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জাকির হোসেন সরকারের কর্মী-সমর্থকরা। ট্রাক প্রতীকে ভোটের মাঠে থাকা জাকির হোসেন সরকার নিজেও তার পক্ষের লোকজনকে সঙ্গে নিয়ে স্বাগত মিছিল করেছেন। 

কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান স্বতন্ত্রপ্রার্থী জাকির হোসেন

এদিকে জনসভায় ডাক না পেলেও দলের কর্মী হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানানো নিজের দায়িত্ব বলে মন্তব্য করেন রংপুর-৫ (মিঠাপুকুর) আসনের আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও জেলার আহ্বায়ক কমিটির সদস্য জাকির হোসেন সরকার। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাকে কেউ প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় অংশ নেওয়ার বা থাকার জন্য বলেনি। আমি তো দীর্ঘ ৩৭ বছর ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করছি। উপজেলার চেয়ারম্যান ছিলাম। দলের মনোনয়ন চেয়েছিলাম কিন্তু পাইনি। দলের মনোনয়নবঞ্চিতদের স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে প্রধানমন্ত্রী উৎসাহ ও সাহস যুগিয়েছেন। আমি স্বতন্ত্র হয়ে ভোট করলেও দলের মধ্যে আছি। 

এদিকে পীরগঞ্জে সরেজমিনে দেখা গেছে, জনসভাস্থলের আশপাশে নেতাকর্মীরা আসতে শুরু করেছেন। ছোট বড় মিছিল নিয়ে আসছেন তারা। তাদের স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠেছে সভাস্থল ও এর আশপাশের এলাকা। নৌকা সাদৃশ্য ভ্যান ও হাতে হাতে ছোট কাঠের নৌকা নিয়ে নেতাকর্মীরা এসেছেন সভাস্থলে।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৮ সালের ২২ ডিসেম্বর তারাগঞ্জ ও পীরগঞ্জে একই মাঠে জনসভা করেছেন। তারও আগে ২০১৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর পীরগঞ্জের তরফমৌজা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে পথসভা ও লালদীঘির ফতেহপুরের জয়সদনে কর্মীসভা করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবশেষ এ বছরের ২ আগস্ট রংপুর জিলা স্কুল মাঠে আওয়ামী লীগের জনসভায় বক্তব্য রাখেন।

এবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রংপুরের ছয়টি সংসদীয় আসনের মধ্যে রংপুর-২ আসনে আবুল কালাম মো. আহসানুল হক চৌধুরী ডিউক, রংপুর-৪ আসনে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, রংপুর-৫ আসনে রাশেক রহমান ও রংপুর-৬ আসনে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী দলীয় প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। জাতীয় পার্টির সঙ্গে আসন সমঝোতার কারণে রংপুর-১ আসনে দলীয় প্রার্থী রেজাউল করিম রাজু ও রংপুর-৩ আসন থেকে তুষার কান্তি মণ্ডলকে প্রত্যাহার করে নিয়েছে আওয়ামী লীগ।

রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান জানান, রংপুর জেলার ছয়টি আসনে দলীয় ও স্বতন্ত্র মিলে ৩৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে রংপুর-১ আসনে নয়জন, রংপুর-২ আসনে তিনজন, রংপুর-৩ আসনে ছয়জন, রংপুর-৪ আসনে তিনজন, রংপুর-৫ আসনে আটজন এবং রংপুর-৬ আসনে সাতজন প্রার্থী। তফসিল অনুযায়ী নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত চলবে। ভোটগ্রহণ আগামী বছরের ৭ জানুয়ারি (রোববার) অনুষ্ঠিত হবে।

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/এএএ