শাজাহান খানের ভাইয়ের সঙ্গে বৈঠক, ৩৭ শিক্ষককে অব্যাহতি
মাদারীপুর-৩ আসনে ভোটকেন্দ্রের দায়িত্ব পাওয়া ৩৭ জন শিক্ষককে নিয়ে বৈঠক করে নৌকার পক্ষে কাজ করার নির্দেশনা দেন মাদারীপুর-২ আসনে নৌকার প্রার্থী শাজাহান খানের ভাই সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ওবায়দুর রহমান খান। ওই বৈঠকে শাহজাহান খানও উপস্থিত ছিলেন।
এ বৈঠকের একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে সেই শিক্ষকদের নির্বাচনের সব ধরনের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।
বিজ্ঞাপন
জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মারুফুর রশিদ খান মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) রাত ১০টার দিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ভিডিওটি আমাদের নজরে আসার পর তা তদন্ত করে দেখার জন্য জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দিয়েছি। তদন্ত প্রতিবেদন আসার আগে ওই ৩৭ শিক্ষককে নির্বাচনি সব কর্মকাণ্ড থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ৩ মিনিটের সেই ভিডিওতে দেখা গেছে, শাজাহান খানের ছোট ভাই ওবায়দুর রহমান খান ৩৭ শিক্ষকের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দিচ্ছেন। এ সময় পাশেই বসা ছিলেন শাজাহান খান।
সেখানে ওবায়দুর রহমান খান বলেন, আপনারা ৩ আসনের (মাদারীপুর-৩) বিষয়ে বেশি গুরুত্ব দেবেন। নিকটাত্মীয়দের নৌকার পক্ষে কাজ করার আহ্বান জানাবেন। ৩ আসনে ভোটার উপস্থিত নিশ্চিত করবেন এবং ৩ আসনের বাইরে যারা আছেন, তাদের নিকটাত্মীয়দের নৌকার পক্ষে কাজ করার জন্য দায়িত্ব পালন করবেন। যাতে আমার গোলাপ ভাইকে নির্বাচিত করতে পারি। তাহলে দাদা (শাজাহান খান) ও গোলাপ ভাই মিলে দীর্ঘদিনের জন্য মাদারীপুরকে স্থিতিশীলতায় নিয়ে আসতে পারবেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বৈঠকে থাকা কয়েকজন শিক্ষক বলেন, নির্বাচনের বিষয়ে সভার কথা বলে ওবায়দুর রহমান খান হঠাৎ বাসায় ডাকেন। তিনি মাদারীপুর সদর উপজেলা শিক্ষক সমাজের সভাপতি। সভাটি হওয়ার কথা ছিল উপজেলা পরিষদে কিন্তু সেটা না হয়ে সংসদ সদস্য শাজাহান খানের বাসায় সভা হয়েছে। তাই আমরা এখানে আসতে বাধ্য হয়েছি।
ছড়িয়ে পড়া ভিডিওর ঘটনা সম্পর্কে ওবায়দুর রহমান খান বলেন, শিক্ষকদের তিনটি গ্রুপ। তারা অনেক দিন ধরেই আমাকে বলছিলেন, তিন গ্রুপকে এক করে দেওয়ার জন্য। আমি তাদের বলেছিলাম, ইলেকশন সামনে, পরে করে দিই। তারা এখনই এক হতে চাইলে আমি তাদের আসতে বলেছিলাম। প্রসঙ্গক্রমে নির্বাচনের কথা উঠছে, মূলত সাংগঠনিক আলোচনাই হয়েছে। এটা কোনো নির্বাচনী প্রচারণা নয়।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তাপস কুমার পাল বলেন, রিটার্নিং কর্মকর্তা বিষয়টি তদন্ত করতে নির্দেশনা দিয়েছেন। সেই মোতাবেক ওই মিটিংয়ে থাকা সব শিক্ষককে শোকজ করেছি। কী কারণে, কেন এ সভায় অংশগ্রহণ করলেন তারা, তা জবাব দিতে বলা হয়েছে।
এএএ