পটুয়াখালীতে এমপি প্রার্থীর বিরুদ্ধে ৩৬ লাখ টাকা আত্মসাতের মামলা!
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে কংগ্রেসের মনোনীত প্রার্থী নাসির উদ্দীন তালুকদারের বিরুদ্ধে পটুয়াখালী সিনিয়র জুডিশিয়াল মাজিস্ট্রেট আদালতে ৩৬ লাখ টাকা আত্মসাতের মামলা করেছেন মো. সাইফুল্লাহ নামে এক ভুক্তভোগী। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুরে সিনিয়র জুডিশিয়াল মাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. আশিকুর রহমানের আদালতে দায়ে করা মামলায় নাসির উদ্দীন তালুকদারসহ তার পরিবারের আরও ৬ জনসহ মোট সাতজনকে আসামি করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
মামলার আসামিরা হলেন, সদর উপজেলার জৈনকাঠী এলাকার মৃত হাকিম হাওলাদারের ছেলে ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পটুয়াখালী-১ আসনে বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রার্থী নাসির উদ্দীন তালুকদার (৪৮), রুস্তুম আলী সরদারের ছেলে মোস্তফা জামাল (৫৫), মৃত ওচমান তালুকদারের ছেলে আব্দুল হাই তালুকদার (৬৫), নাসির উদ্দীন তালুকদারের স্ত্রী লাইজু পারভীন (৪০), টাউন জৈনকাঠী এলাকার এনছান আলী হাওলাদারে ছেলে এনায়েত হোসেন (৬০), গুলবাগ এলাকার নুরুল ইসলামের স্ত্রী কাকুলী (৩৫) এবং দক্ষিণ সবুজবাগ এলাকার সামশুল হক মোল্লার ছেলে সহিদুল ইসলাম (৪০)।
এদিকে আজ দুপুরের আদালত প্রাঙ্গণে প্রতারকের বিচার চেয়ে জেলা আইনজীবী সমিতির সামনে মানববন্ধন করেছে ভুক্তভোগী প্রায় অর্ধশতাধিক নারী ও পুরুষ। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন ভুক্তভোগী ও মামলার বাদী সাইফুল্লাহ, ভুক্তভোগী পাখি আক্তার, রুহুল আমিন, জাহানুর বেগম ও শাহিনুর বেগম।
বিজ্ঞাপন
এসময় বক্তারা বলেন, নাসির উদ্দীন তালুকদারের নির্দিষ্ট কোনো পেশা নেই। সে বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে আশ্রয় নিয়ে স্থানীয় মানুষের মধ্যে বিশ্বাস স্থাপন ও সম্পর্ক গড়ে তুলে। তারপর সেখানকার মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে আত্মগোপন করে। প্রতারণার টাকায় একজন ভোটে দাঁড়াবে, আর মানুষ তাকে ভোট দেবে, তা হতে পারে না।
মামলা সূত্রে জানা যায়, নাসির উদ্দীন নিজের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ২০০২ সালে জনকর্ম সহায়ক সোসাইটি (জনক) নামে একটি নামসর্বস্ব এনজিও প্রতিষ্ঠা করে। পটুয়াখালী পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডে জাকিয়া মঞ্জিলে জাঁকজমকপূর্ণ অফিস নিয়ে মানুষকে আকৃষ্ট করে। দীর্ঘদিন কার্যক্রম চালিয়ে মানুষের বিশ্বাস অর্জন করে প্রায় পাঁচ শতাধিক সাধারণ মানুষের প্রায় কোটি টাকা গ্রহণ করে। তবে কয়েকদিন পরে নাসির উদ্দীন আত্মগোপনে চলে। পরে নাসির উদ্দীন ২০১২ সালের জুলাই মাসে ভুক্তভোগীদের টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে অঙ্গিকার করে আবার আত্মগোপনে চলে যায়।
তবে অভিযুক্ত নাসির উদ্দীন তালুকদার তার বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এটা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। আমি নির্বাচন করি, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী কৌশল করে, সাবেক সদস্যদের দিয়ে আমার বিরুদ্ধে মামলা ও অপ্রচার করছে। আমি সমিতি বন্ধ করে দিয়েছি ১৫ বছর আগে। আর এখন বিশ বছর পরে এসে সেই সমিতির সদস্যরা টাকার দাবি করে। এতোদিন তারা কেন টাকা চায়নি। আমি অবশ্যই সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করবো।
মাহমুদ হাসান রায়হান/এমএএস