সরিয়ে নেওয়া হয়েছে কেন্দ্র, ভোট দিতে যেতে হবে অন্য এলাকায়
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফেনী-২ আসনের আওতাধীন পৌরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের রামপুর সওদাগর বাড়ি মধুপুরের একাংশের ভোটারদের জন্য কোনো ভোটকেন্দ্র রাখা হয়নি। ওই ওয়ার্ডের ৫ হাজার ২৩৭ জন ভোটারকে ভোট প্রদানের জন্য আসতে হবে পৌর দুই নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত ফেনী সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ভবনে। জেলা নির্বাচন অফিস কর্তৃক প্রকাশিত সংসদীয় আসন ২৬৬ তথা ফেনী-২ আসনের ভোটকেন্দ্রগুলোর তালিকা থেকে এই তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।
জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পৌরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটাররা রামপুর হাফেজিয়া মাদরাসা এবং পশ্চিম উকিলপাড়ায় চাইল্ডস হ্যাভেন প্রি-ক্যাডেট ইনস্টিটিউট কেন্দ্রে ভোট প্রদান করতেন। এই কেন্দ্রে পুরুষ ভোটার রয়েছে ২ হাজর ৫৯৯ জন এবং নারী ভোটার ২ হাজার ৬৩৮ জন। এখন শহরের একপ্রান্তের ভোটারদের ভোটকেন্দ্র অন্যপ্রান্তে সরিয়ে আনায় মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
১৮ নম্বর ওয়ার্ডের একাধিক ভোটার অভিযোগ করে প্রতিবেদককে বলেন, শহরের একপ্রান্তে আমাদের বাড়ি আর অন্যপ্রান্তে ভোটকেন্দ্র করা হয়েছে। এতে আমাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে কেন্দ্রে আসতে হলে প্রায় একশ টাকা ভাড়া গুণতে হবে। ভোটারা কেন্দ্রে যেতে আগ্রহ প্রকাশ করবে না।
স্থানীয় বাসিন্দা ও জেলা বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের এক নেতার দাবি, ১৮ নম্বর ওয়ার্ডটি বিএনপি অধ্যুষিত কেন্দ্র। এখানে বিএনপির ভোট বেশি। সেজন্যই এটিকে ২ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যে স্থানান্তর করা হয়েছে যাতে জনসাধারণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে না পারে। সর্বশেষ ফেনী পৌর নির্বাচনেও এ ওয়ার্ডের ভোটাররা ভোট দিয়েছিল রামপুর হাফেজিয়া মাদরাসা কেন্দ্রে। যেহেতু বিএনপি এবার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি তাই এই কেন্দ্রটিকে পরিকল্পিতভাবে ওখানে স্থানান্তর করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
এই প্রসঙ্গে ১৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি সাইফুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, চাইল্ডস হ্যাভেন স্কুলটি আগে ছিল, বর্তমানে এটি আর নেই। একই এলাকায় অন্য কোনো স্থাপনায় কেন ভোটকেন্দ্র করা হয়নি এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটি আমার জানা নেই।
এই ব্যাপারে জানতে চাইলে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ রেজাউল করিম ঢাকা পোস্টকে বলেন, ভোটকেন্দ্রের তালিকা আমি ফেনীতে যোগদানের আগেই করা হয়েছে। এই বিষয়ে অবগত না। তবে কেন্দ্র তালিকা প্রণয়নে গঠিত কমিটিতে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ একাধিক কর্মকর্তা রয়েছেন।
প্রসঙ্গত, এ ওয়ার্ডে ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বটগাছ প্রতীক নিয়ে মাওলানা ইব্রাহিম খলিলউল্ল্যাহ শরিফী পেয়েছিলেন ১৬ ভোট, নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ইকবাল সোবহান পেয়েছিলেন ৮২০ ভোট, কাঁঠাল প্রতীকের মমিনুল হক পেয়েছিলেন ১১ ভোট, ধানের শীষ প্রতীকের জয়নাল আবেদিন পেয়েছিলেন ১ হাজার ৮৩০ ভোট, মই প্রতীকে হারাধন চক্রবর্তী পেয়েছিলেন ৯ ভোট। ভোটের শতকরা হার ছিল ৭৭ দশমিক ১২ শতাংশ।
তারেক চৌধুরী/আরকে