পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ‘ড. মুহাম্মদ ইউনূস একজন নোবেল বিজয়ী। তিনি আমাদের জাতীয় সম্পদ। আমরা তাকে অত্যন্ত সম্মান করি। কিন্তু পৃথিবীতে বহু নোবেলজয়ী আছেন, যারা বিভিন্নভাবে অন্যায় কাজ করেছেন। তাদের শাস্তিও হয়েছে। এ ক্ষেত্রে দেখা যায়, আমাদের নোবেল জয়ীও (মুহাম্মদ ইউনূস) ক্রিমিনাল কাজ করেছেন।’

মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) রাতে সিলেট-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এ কে আব্দুল মোমেন সিলেট নগরের ধোপাদীঘির পাড় এলাকায় তার প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়ে প্রবাসীদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন।

মুহাম্মদ ইউনূস প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমি যেটা জানি উনি উনার লেবারদের (শ্রমিকদের) পয়সা দেননি। তিনি তাদের ঠকিয়েছেন। সেজন্য উনার বিরুদ্ধে জাজমেন্ট হয়েছে। এটা কোর্টের ব্যাপার। এর জন্য কিছু হবে বলে মনে করি না। এটা একটা প্রচলিত আইনের হিউজ প্রসেস। উনি সুযোগ পেয়েছেন আইনি লড়াই করার। উনি সুযোগ পেয়েছেন যুক্তিতর্কের। তারপর এভিডেন্সের বেসিসে তারা জাজমেন্ট করেছেন। কারণ, প্রত্যেক দেশ আইনকে সম্মান করে। এর ফলে কোনো অসুবিধা হবে বলে আমার মনে হয় না।’

বাংলাদেশের একপেশে নির্বাচন ও নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে বিবিসির প্রতিবেদন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বিবিসি তো বিভিন্ন রকমের প্রতিবেদন দেয়। প্রায় সময়ই দেয়। একসময় তারা বলল যে বাংলাদেশে কোভিডের ফলে তিন কোটি-পাঁচ কোটি লোক মারা যাবে। ওরা একটা বলার জন্য দেয়। মিডিয়া অনেক সময় তো চকমারি কিছু বলে, যাতে অ্যাট্রাকশন হয়। আর বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে অনেক আলোচনা হচ্ছে। উনারা চকমারি কিছু দিয়েছে। আমার মনে হয় না কোনো রিপোর্টিংয়ের বেসিসে কোনো সরকার সিদ্ধান্ত নেয়।’

তিনিও আরও বলেন, ‘বিভিন্ন দেশে শত শত পত্রিকা বের হয়। সব দেশেই সরকার একটা বিচার-বিশ্লেষণ করে তাদের নিজেদের দেশের স্বার্থ ঠিক করে, ভবিষ্যৎ সংকট সম্পর্কে চিন্তা করে, আন্তর্জাতিক পরিপ্রেক্ষিতে তাদের ভাবধারা নিয়ে চিন্তা করে। সব দেশের সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্ক আছে, কোনো দেশের সঙ্গে আমাদের শত্রুতা নেই। সুতরাং এ ক্ষেত্রে এ ধরনের দু-একটা রিপোর্ট নিয়ে আমরা ওরিড না। কারণ আমার দেশে আমরা চাই একটা অবাধ, সুষ্ঠু, স্বচ্ছ, সুন্দর ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। এটা যদি করতে পারি তাহলে সেটাই আমাদের সাকসেস। আমাদের দেশবাসী যদি মনে করে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন তবে সেটাই আমাদের সাকসেস।’

প্রবাসীদের বিমানবন্দরে হয়রানির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আগে বিমানবন্দরে প্রবাসীদের অনেক হয়রানি ছিল। ইদানীং অনেক কমে গেছে। তবে একেবারে জিরো হয়েছে, সেটি আমি বলতে পারব না। তবে অনেক অনেক হয়রানি কমেছে। তাদের আসা-যাওয়া অনেক সহজ হয়েছে। দুনিয়ার সব বিমানবন্দরে ঝামেলা হয়, আমাদের দেশেও হয়।’

মতবিনিময় সভায় প্রবাসী ব্যক্তিত্ব সেলিম মুবদার সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী সদস্য মিসবাহ উদ্দিন আহমদ, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও দৈনিক একাত্তরের কথার প্রকাশক নজরুল ইসলাম বাবুল, মাহা’র স্বত্বাধিকারী মাহি উদ্দিন সেলিম, ফারুক আহমদ চৌধুরী, ফকরুল চৌধুরী, কল্লোল আহমদ, কাজী কায়েস, সাজেদুর রহমান, ইফজাল চৌধুরী, আহমেদুল কবীর প্রমুখ।

মাসুদ আহমদ রনি/এমজেইউ