বরিশালের আগৈলঝাড়ায় গ্রামীণ সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের ধারক হিসেবে ২৪৩ বছরের প্রাচীন মারবেল মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (১৫ জানুয়ারি) উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নের পৌষ সংক্রান্তিতে এ মেলা অনুষ্ঠিত হয়।

মেলায় শুধু আগৈলঝাড়া উপজেলা নয়, পার্শ্ববর্তী কোটালীপাড়া, উজিরপুর, ডাসার, মাদারীপুর, কালকিনি, গৌরনদী, বানারীপাড়া, বাকেরগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকার দর্শনার্থীরা যোগ দেন।

মেলা কমিটির সভাপতি রাম কৃষ্ণ হালদার জানান, রামানন্দের আঁক গ্রামে ২৪৩ বছর আগে আউলিয়া মা সোনাই চাঁদের ৬ বছর বয়সে বিয়ে হয়। ৭ বছর বয়সে স্বামী মারা গেলে নিঃসন্তান অবস্থায় শ্বশুরবাড়িতে একটি নিম গাছের গোড়ায় আরাধনা ও পূজা-অর্চনা আরম্ভ করেন। তার অলৌকিকত্ব ছড়িয়ে পরলে ওই স্থানে বাৎসরিক পূজার আয়োজন করা হয়। সেখানেই ১৭৮০ সাল থেকে পৌষ সংক্রান্তিতে নবান্নের আয়োজন করা হয়। নবান্নের আয়োজনে মারবেল মেলা, কবিগান, বৈষ্ণব সেবা ও খাবার বিতরণ করা হয়।

স্থানীয় প্রবীর বিশ্বাস জানান, আমাদের পূর্বপুরুষরা এ খেলার মাধ্যমে মেলার প্রচলন করেছিল। যা আজও অব্যাহত আছে। তাদের উত্তরসূরি হিসেবে আমরা সেই প্রাচীন ঐতিহ্য ধরে রাখার চেষ্টা করছি।

নবান্নের দিন ঘিরে ওই গ্রামে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। স্থানীয় অধিবাসীরা তাদের মেয়ে-জামাইসহ অন্যান্য আত্মীয়-স্বজনদের এ মারবেল মেলায় আমন্ত্রণ জানিয়ে আসছে। কোটালীপাড়া উপজেলা থেকে মেলায় আগত প্রভাষক তরুন চন্দ্র নাথ বলেন, এ এলাকার ঐতিহ্যবাহী মারবেল খেলার কথা শুনে মেলায় এসেছি।

রামানন্দের আঁক মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কয়েক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে মারবেল খেলা চলছে। রাস্তার ওপর, বাড়ির আঙিনা, অনাবাদি জমি, বাগানসহ সর্বত্রই মারবেল খেলার আসর বসেছে। বিদ্যালয় মাঠে বসেছে বাঁশ-বেত শিল্প সামগ্রী, মনিহারি, খেলনা, মিষ্টি, ফলসহ বিভিন্ন ধরনের দোকান।

আগৈলঝাড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. জহিরুল ইসলাম জানান, গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী মারবেল মেলায় আগত দর্শনার্থীদের জন্য নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

সৈয়দ মেহেদী হাসান/এএএ