উত্তরের জেলা নীলফামারীতে হিমেল হাওয়ার সঙ্গে জেঁকে বসা শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। শীতের দাপটে বেশি কাবু হয়ে পড়েছেন দিনমজুর ও খেটে খাওয়া মানুষেরা। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বের হচ্ছে না সাধারণ মানুষ। শীতজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে হাসপাতালে। সেই সঙ্গে বিদ্যালয়গামী কোমলমতি শিক্ষার্থীরাও পড়েছে বিপাকে। 

বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) সকাল ৬টা ও ৯টায় নীলফামারীর সৈয়দপুর বিমানবন্দরে আবহাওয়া অফিসে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া ডিমলা আবহাওয়া অফিসে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপমাত্রা বিচারে এটি মৃদু শৈত্যপ্রবাহ।

শৈত্যপ্রবাহ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে নামলে স্কুল-কলেজ ও প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ রাখার নির্দেশনা রয়েছে মন্ত্রণালয়ের। তবে এ নির্দেশনা মানা হয়নি নীলফামারী জেলায়।

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) গত ১৬ জানুয়ারি বলেছিল, যেসব জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামবে, সেসব জেলার মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ রাখা হবে।

আবার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (বিদ্যালয়-২) মোহাম্মদ কবির উদ্দীনের স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে কোনো জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা যদি ১০ ডিগ্রির নিচে নামে, সেক্ষেত্রে সেই জেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ রাখা হবে বলে নির্দেশনা দেওয়া হয়। তবে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা থাকলেও বন্ধ হয়নি নীলফামারীর কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।

একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান ঢাকা পোস্টকে জানান, মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী তারা এখন পর্যন্ত স্কুল বন্ধ কোনো নির্দেশনা পাননি। তাই তাদের স্কুল চালু রেখেছেন। নির্দেশনা পেলে স্কুল বন্ধ করবেন তারা। 

জেলা সদরের চওড়া বড়গাছা ইউনিয়নের কিসামত দলুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ওয়ালিউল হাসনাত ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রজ্ঞাপন দেখেছি ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার নিচে থাকলে স্কুল বন্ধ দেওয়ার কথা। কিন্তু জেলা অফিস থেকে আমরা এখনো এরকম কোনো নির্দেশনা পাইনি তাই স্কুল চলমান রয়েছে।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ এম শাহজাহান সিদ্দিক ঢাকা পোস্টকে বলেন, সকাল ৯ টার দিকে জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল। তবে স্কুল চালুর পর তাপমাত্রা বেড়ে গেছে এজন্য কোনো স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়নি। আর আমি বন্ধ করার কেউ না সেটা বন্ধ করবে বিভাগীয় উপপরিচালক। উনি আমাদের সাথে ও আবহাওয়া অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেছেন।

জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা খোঁজ রাখছি এবং প্রতিদিন রিপোর্ট দিতে হচ্ছে কত ডিগ্রি পর্যন্ত আছে। গতকাল রাত পর্যন্ত ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস সংগ্রহ করেছি। যেহেতু জেলা শহরে কোনো আবহাওয়া অফিস নাই, আছে সৈয়দপুর ও ডিমলায় সেজন্য আমরা মোবাইল অ্যাপসে তাপমাত্রা দেখি। আজকে আবহাওয়া ভালো আছে এজন্য সব স্কুল খোলা রয়েছে।

শরিফুল ইসলাম/আরকে