ফেনী সদর উপজেলার ফাজিলপুর ইউনিয়নে একটি দোকানে স্বর্ণ লুটের ঘটনায় ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে ১১ ভরি ৪ আনা স্বর্ণালংকার ও এক লাখ ৮ হাজার ৫০০ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। 

গতকাল নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ফেনী পুলিশ সুপার জাকির হাসান। 

যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তারা হলেন— কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর মুকসাইর গ্রামের মো. আলাউদ্দিন (৩০), চট্টগ্রাম জেলার আনোয়ারা পীরখাইন এলাকার মো. ফরহাদ (৩৯), একই জেলার বাকুলিয়া কালামিয়া বাজারের মো. বাদশা চৌধুরী (২৩), কুমিল্লা জেলার হোমনা উপজেলার কামাল্লা গ্রামের মো. সজিব ওরফে শুক্কুর (২৬), একই জেলার মুরাদনগর মোল্লাপাড়ার মো. মিজান (২৮) এবং দেবিদ্বার পান্নারপুল এলাকার মো. শফিক সোহেল ওরফে দাঁতলা শফিক (৩২)। 

পুলিশ সুপার জাকির হাসান বলেন, সিসি টিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে দেখা যায় ফরহাদ ও বাদশা অন্য দুই পলাতক আসামিসহ ঘটনার আগের দিন (১০ জানুয়ারি) ফাজিলপুর বাজারে এসে দীর্ঘক্ষণ অবস্থান করে দুপুরে দোকান বন্ধ করা ও আবার খোলার সময় পর্যবেক্ষণ করেন। পরদিন খাবার শেষে মালিক দোকান খোলার পর চক্রের ৪ জন আলাদিন জুয়েলার্সে ক্রেতা সেজে ঢোকেন। তখন আসামি ফরহাদ দোকান মালিকের সাথে দরদাম করে ১২শ টাকা দিয়ে একটি নাক ফুল কেনেন। ওই সময় ভেতরে থাকা অন্য তিন জন দোকানের স্বর্ণালংকার কোথায় আছে ও ভেতরে শাটার কেটে সহজে কোন পথে প্রবেশ করা যায় তা দেখে নেন। আলাদিন জুয়েলার্সের পাশের গলি, সেলুনসহ সামনের পথ, সবজির দোকান কিভাবে পাহারা দিতে হবে এবং চুরি করে কোন পথে সহজে বের হয়ে পালানো যাবে সেসব দেখে নেন।

পুলিশ সুপার বলেন, পরিকল্পনা মোতাবেক ১১ জানুয়ারি দুপুরে জুয়েলার্স বন্ধ করে মালিক বাড়ি যাওয়ার পর চক্রের প্রধান বাদশার নেতৃত্বে যে যার মতো অবস্থান নেন। আসামি আলাউদ্দিন দোকানের তালা কাটেন, অন্য আসামি গলির পথে পাহারায় থাকেন, শফিক ব্যাগ নিয়ে দোকানে প্রবেশ করে স্বর্ণালংকার চুরি করে ব্যাগে ভরে পালিয়ে যান। এ সময় তারা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে ফাজিলপুর বাজার থেকে মহাসড়কে আসেন। সেখান থেকে ফেনী হয়ে তারা কুমিল্লায় পালিয়ে যান।

পুলিশ সুপার আরও বলেন, তথ্য প্রযুক্তি ও ম্যানুয়াল সোর্সিংয়ের মাধ্যমে বিশেষ অভিযান চালিয়ে চট্টগ্রাম জেলার আনোয়ারা থানা, বাকুলিয়া থানা, কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর, হোমনা, দেবিদ্বারসহ অন্যান্য এলাকা থেকে ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ সময় লুট হওয়া ৭৫ ভরি স্বর্ণের মধ্যে ১১ ভরি ৪ আনা ও নগদ ১ লাখ ৮ হাজার ৫০০ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় মোট ১২ জনের জড়িত থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। 

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার জাকির হাসান বলেন, দেশের বিভিন্ন থানায় গ্রেপ্তারকৃত আসামি আলাউদ্দিনের বিরুদ্ধে ৭টি, মো. শফিকের বিরুদ্ধে ১৩টি, মো. বাদশার বিরুদ্ধে ৭টি, মো. ফরহাদের বিরুদ্ধে ৫টি, মো. সুমনের বিরুদ্ধে ৬টি ও মো. মিজানের বিরুদ্ধে ৩টি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে।

এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) মুহাম্মদ শাহাদাৎ হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) থোয়াই অংপ্রু মারমা, ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহিদুল ইসলাম চৌধুরীসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

তারেক চৌধুরী/এনএফ