সিলেটে সড়কে বাঁশ ফেলে যানবাহন ও মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করছে পুলিশ

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে চলমান লকডাউন বাস্তবায়নে সিলেট নগরীর মোড়ে মোড়ে বাঁশ ফেলে যানবাহন ও মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করছে পুলিশ। এছাড়াও নগরের বিভিন্ন স্থানে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। বাড়ানো হয়েছে পুলিশের টহল।

সোমবার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে সিলেট নগরের আম্বরখানা, টিলাগড়, সোবহানীঘাট, বন্দরবাজার, রিকাবীবাজার, আম্বরখানা, মদিনা মার্কেট, তেমুখী, টুকেরবাজার, মজুমদাড়ি এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, জরুরি প্রয়োজন ছাড়া অন্য কোনো যানবাহন ও মানুষ চলাচল করতে দেওয়া হচ্ছে না। এমনকি চলাচল নিয়ন্ত্রণ করতে সড়কের মোড়ে বাঁশ ফেলে ব্যারিকেড তৈরি করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে যারা বাইরে বের হওয়ার যৌক্তিক কারণ বা মুভমেন্ট পাস দেখাতে পারছেন তাদেরকে যেতে দেওয়া হচ্ছে। অন্যথায় ফেরত পাঠানো হচ্ছে। এমনকি যারা নিয়ম মানছেন না তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হচ্ছে। জরিমানাও আদায় করা হচ্ছে। অনেক সময় যানবাহন জব্দ করছে পুলিশ।

সিলেট নগরের টিলাগড় এলাকায় দেখা যায়, সেখানে বাঁশ দিয়ে ব্যারিকেড দিয়ে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। তবে সেই বাঁশের ব্যারিকেডটি দেওয়া হয়েছে একটি গ্যাস সিলিন্ডার দিয়ে। যদিও সেখানকার এক স্থানীয় ব্যবসায়ী জানিয়েছেন- সিলিন্ডারটি খালি। তবে সারাদিন রোদে গরম হয়ে সেই গ্যাস সিলিন্ডার থেকে কোনো ধরণের ঝুঁকি থেকে যায় কিনা সেই প্রশ্নও করেছেন বেশ কয়েকজন।

টিলাগড় এলাকার বাসিন্দা পারভেজ আহমদ বলেন, ব্যারিকেডের সামনে গ্যাসের সিলিন্ডার দেখতেই অনেকটা ভয় লাগে। খালি হলেও সড়কের মাঝখানে রোদের মধ্যে সিলিন্ডার রাখা কতটা যৌক্তিক আমি বুঝতে পারছি না। এটার কারণে ঝুঁকি রয়েছে কিনা সেটিও বুঝতে পারছি না।

পুলিশ জানায়, সিলেট নগরে লকডাউন শুরুর দিন থেকে মোট ১৯১টি মামলা হয়েছে। পাশাপাশি ২৩৩টি যানবাহন জব্দ করা হয়েছে। সিলেট মহানগরের প্রবেশমুখে ২৪ ঘণ্টার জন্য ট্রাফিক বিভাগের ছয়টি চেকপোস্ট এবং নগরের ভেতরে আরও ১৪টি চেকপোস্ট বসানো হয়েছে।

তবে বাঁশের ব্যারিকেড, মামলা, জরিমানা আর চেকপোস্ট বসালেও ঘর থেকে মানুষের বের হওয়া নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। মূল সড়ক বন্ধ থাকলেও অন্য সড়ক দিয়ে মানুষ চলাচল করছে। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মানুষের চলাচল কিছুটা কম থাকলেও দুপুরের পর থেকে তা বাড়তে থাকে। বিশেষ করে সিলেট নগরীর আম্বরখানা এলাকায় মানুষের চলাচল সবচেয়ে বেশি।

আম্বরখানা এলাকায় পুলিশের ব্যারিকেড দেখে বিকল্প পথে চলে যান রিকশাচালক আলী হোসেন। কিছু দূর যাওয়ার পর তাকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি আমি। আমি যদি রিকশা নিয়ে বের না হই তাহলে আমার পরিবারের সকল সদস্য না খেয়ে থাকবে। যার কারণে বাধ্য হয়ে ঝুঁকি নিয়ে সড়কে রিকশা চালাতে বের হয়েছি। 

সিলেট মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (গণমাধ্যম) বিএম আশরাফ উল্যাহ তাহের বলেন, মূল সড়ক ব্যারিকেড দিয়ে আটকানো থাকলেও ফাঁড়ি পথ ব্যবহার করছে বেশির ভাগ মানুষ। লকডাউন বাস্তবায়ন করতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি। সরকারি বিধিনিষেধ যারা মানছেন না তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

তুহিন আহমদ/আরএআর