গাজীপুরের টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমার আখেরি মোনাজাতে পুরুষদের পাশাপাশি অংশ নিয়েছেন নারীরাও। আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে বিভিন্ন এলাকা থেকে কয়েক হাজার নারী শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) রাত থেকেই ময়দানে আসতে শুরু করেন। তারা ইজতেমা ময়দানের আশপাশ, বিভিন্ন মিলকারখানা, বাসা-বাড়ি ও বিভিন্ন দালানের ছাদে বসে আখেরি মোনাজাতে অংশ নেওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছেন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, রোববার ভোর থেকে নারীরা ইজতেমা ময়দানের পশ্চিম পাশে কামারপাড়া সড়ক ও আশপাশের খোলা জায়গায় আখেরি মোনাজাতে শরিক হতে অবস্থান নিয়েছেন। আখেরি মোনাজাতের ফজিলত লাভের আশায় তারা মোনাজাতে শরিক হতেই ময়দানের আশপাশের এলাকায় পর্দার সঙ্গে অবস্থান নিয়েছেন। বেশিরভাগ নারীর দাবি আমাদের আখেরি মোনাজাতে অংশ নেওয়ার জন্য আলাদাভাবে ব্যবস্থা করা হোক।

টাঙ্গাইলের করটিয়া থেকে বিশ্ব ইজতেমার আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে ময়দানে এসেছেন মমতাজ বেগম। তিনি বলেন, বিশ্ব ইজতেমায় আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে নারীদের কোনো স্থান, খিত্তা বা প্যান্ডেল নির্মাণ করা হয়নি। লাখ লাখ মুসল্লির সাথে আল্লাহ দরবারে হাত তোলার আগ্রহ নিয়ে ময়দানে এসে খোলা আকাশের নিচে বসে থাকতে হয়। এতে খুব কষ্ট হয়। ইজতেমা বা প্রশাসন যদি নারীদের জন্য আলাদা বসার ব্যবস্থা করতেন তাহলে আমরা নির্বিঘ্নে আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে পারতাম।

আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে আসা আরেক নারী নাসরিন আক্তার বলেন, প্রতিবছরই আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে ময়দানে আসি। নির্দিষ্ট জায়গা না থাকায় আমাদের খুব খুব সমস্যা হয়। তারপরও আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে রোববার ভোরে আমার কলেজ পড়ুয়া নাতিকে নিয়ে টঙ্গীতে এসেছি। টঙ্গী কামারপাড়া সড়কে প্লাস্টিকের কাগজ কিনে বসে আছি আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে।

তিনি আরও বলেন, আখেরি মোনাজাতে অংশ নেওয়ার সুবিধার জন্য ইজতেমাস্থলের আশেপাশে কোনো নিরাপদ স্থানে প্যান্ডেল নির্মাণ করা হোক। 

রাজধানীর খিলক্ষেত থেকে এসেছেন আমেনা আক্তার। তিনি বলেন, দ্বিতীয় পর্বের বিশ্ব ইজতেমার প্রথম থেকেই আমার স্বামী-সন্তান যোগ দিয়েছে। তারা ময়দানের ভেতরে আছেন। আখেরি মোনাজাতে অংশ নেওয়ার জন্য শনিবার শেষ রাতে টঙ্গী ময়দান এলাকায় পৌঁছেছি। ইজতেমাস্থলে আখেরি মোনাজাতে তাবলীগ মুরুব্বি নারীদের অংশগ্রহণের অনুমতি না থাকলেও আমরা পর্দার সঙ্গে লাখ লাখ মুসিল্লদের সঙ্গে আখেরি মোনাজাতে অংশ নিয়ে দুহাত তুলি। আল্লার কাছে নিজের, পরিবারের ও দেশের কল্যাণ কামনা করছি।

শিহাব খান/আরকে