‘আমার ভাইকে ওরা তিল তিল করে কষ্ট দিয়ে মেরে ফেলেছে’
‘আমার ভাই আমাকে কোলে পিঠে করে মানুষ করেছে। গোটা গ্রামের কেউ আমার ভাইকে নিয়ে একটা বাজে কথা বলতে পারবে না। ও একটা পান-সিগারেটও খেতো না। ওরা আমার ভাইকে তিল তিল করে কষ্ট দিয়ে মেরে ফেলেছে। আমি ওদের ফাঁসি চাই।’
বড় ভাইয়ের হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধনে এভাবেই কথাগুলো বলছিল নিহত ফয়জুর রহমানের (২৭) ছোট ভাই মো. ফয়সাল ইসলাম (১১)। মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে যশোর-মনিরামপুর মহাসড়কে মানববন্ধন এবং বিক্ষোভ মিছিল করেন এলাকাবাসী। সেখানে বক্তব্য দেয় ফয়সাল ইসলাম।
বিজ্ঞাপন
এর আগে গত শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাতে যশোর সদর উপজেলার সতীঘাটা নামক এলাকায় একটি ওয়ার্কশপে চুরির অপবাদ দিয়ে রাতভর নির্যাতন করে ইটভাটার শ্রমিক ফয়জুর রহমানকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। তিনি সতীঘাটা গোলদার পাড়া এলাকার জালাল উদ্দীন গাজীর ছেলে।
মানববন্ধনে ফয়জুর রহমানের বাবা জালাল উদ্দীন গাজী বলেন, আমার ছেলের আয়ে আমাদের সংসার চলতো। আমার ছেলেকে যারা মেরেছে তাদের আমি সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি চাই। এমন শাস্তি হওয়া উচিত যে পরবর্তীতে কোনো বাবা-মায়ের কোল কেউ খালি করার সাহস না পায়। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট আমার সন্তান হত্যার বিচার চাই।
বিজ্ঞাপন
নিহত ফয়জুর রহমানের স্ত্রী জেসমিন নাহার বলেন, ঘটনার দিন রাতে আমি ওর জন্য ভাত বাড়ছিলাম। এমন সময় শুনি ফয়জুলকে নাকি চুরির দায়ে ওয়ার্কশপে আটকে রেখেছে। আমি ওই সময়ই ছুটে গিয়ে ওয়ার্কশপ মালিক আব্দুল্লাহর পা জড়িয়ে ধরি এবং বলি আমার স্বামীকে ছেড়ে দিন। ও যদি কোনো অপরাধ করে ওরে পুলিশে দিয়ে দেন, কিন্তু আপনারা ওরে এভাবে মারবেন না। সেদিন সারা রাত আমার স্বামীকে ওরা নির্যাতন করে মেরেই ফেলল। আমার ছোট বাচ্চাটার মুখের দিকেও একবার তাকালো না।
ফয়জুলের প্রতিবেশী বিল্লাল হোসেন বলেন, আমরা গোটা গ্রামবাসী আজ ফয়জুর হত্যার বিচারের দাবিতে সড়কে নেমেছি। ফয়জুরের সঙ্গে যে ঘটনাটি ঘটেছে সেটি আলোড়ন সৃষ্টি করা একটি হত্যাকাণ্ড। এই ঘটনার দ্রুত বিচার হওয়া উচিত এবং আমরা হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
এ্যান্টনি দাস অপু/আরএআর