সুন্দরবনের খাল থেকে ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার করা বাঘটির স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে বন বিভাগ। ইতোমধ্যে বাঘটির ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হয়েছে। পাঠানো হয়েছে করমজলে। সেখানে সংরক্ষণ করা হবে বাঘটির চামড়া ও কঙ্কাল।

বন বিভাগ জানায়, সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) রাতে সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের কচিখালী এলাকার একটি খাল থেকে বাঘের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ৯ ফুট দৈর্ঘ্য ও ২৫৫ কেজি ওজনের মৃত বাঘটি পুরুষ, বয়স আনুমানিক ১৫। বাঘটির শরীরে কোনো প্রকার আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। করমজল ইন্টারপ্রিটেশন অ্যান্ড ইনফরমেশন সেন্টারে সংরক্ষণ প্রক্রিয়া শেষ হতে আরও কয়েক দিন লাগবে। বাঘটির দেহাবশেষ বিশেষ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সুন্দরবনের করমজলে সংরক্ষণ করা হবে। সেখানে করমজল ইন্টারপ্রিটেশন অ্যান্ড ইনফরমেশন সেন্টারে দর্শনার্থীদের দেখার জন্য উন্মুক্ত থাকবে বাঘটি।

এদিকে মৃত বাঘটির চামড়া ও কঙ্কাল সংরক্ষণের কাজ শুরু হয়েছে করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রে।

করমজল বন্য প্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ কবির ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিশেষ প্রক্রিয়ায় বাঘের শরীর থেকে চামড়া ও হাড় থেকে মাংস পৃথক করা হয়েছে। পর্যাপ্ত পরিমাণ মাংস ফেলে দিয়ে হাড়গুলোকে সিদ্ধ করা হবে। তারপর সেই হাড়কে পরিষ্কার করে সব হাড় যুক্ত করে বাঘের অবয়ব তৈরি করা হবে। সব কাজ শেষ হলে বাঘটির চামড়া ও কঙ্কাল সংরক্ষণ করা হবে।

তিনি আরও বলেন, এর আগে একটি কুমির মারা গেলে তার হাড় দিয়ে কুমিরটির অবয়ব তৈরি করে সংরক্ষণ করা হয়েছিল, যা পর্যটকদের দেখার জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে।

গতকাল বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সুন্দরবন দিবসের এক আলোচনায় বন রক্ষক মিহির কুমার দে বলেন, একটি বাঘ বনে থাকলে সর্বোচ্চ ১২ থেকে ১৫ বছর জীবিত থাকে। তারপর বৃদ্ধ হয়ে যায়, শিকারের সক্ষমতা থাকে না, মারা যায়। আর চিড়িয়াখানায় রাখলে হয়ত ২০ বছর বেঁচে থাকবে। সুন্দরবনের বাঘটির ময়নাতদন্ত করে প্রাথমিকভাবে দেখা গেছে তার স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। বয়স হয়েছিল আনুমানিক ১৫ বছর। এর পাশাপাশি বাঘটির লিভার ও পাকস্থলীর স্যাম্পল আমরা সংগ্রহ করেছি। সেটি আমরা ফরেনসিক ল্যাবে পাঠাব। অন্য কোনো কারণে মারা গেছে কি না সেটা দেখতে হবে।

তিনি আরও বলেন, সুন্দরবনে এখন বনদস্যু নেই। বাঘ হত্যা অনেকটাই কমে গেছে। ফলে সুন্দরবনে বাঘের পদচারণা বেড়েছে। আমাদের ক্যামেরা ট্র্যাপিং চলছে, সুন্দরবনে বাচ্চাসহ আমরা যথেষ্ট পায়ের ছাপ ও বাঘের উপস্থিতি দেখতে পাচ্ছি। এটা ভালো দিক।

মোহাম্মদ মিলন/এমজেইউ