টাঙ্গাইলে সড়কে ঢালাইয়ের পরের দিনই ফাটল!
টাঙ্গাইলের বাসাইলে একটি সড়কে আরসিসি ঢালাই করার পরের দিনই ফাটল দেখা দিয়েছে। নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করায় ফাটল দেখা দিয়েছে বলে ক্ষোভ জানিয়েছে স্থানীয়রা।
সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) উপজেলার কাশিল বটতলা-বাথুলীসাদী বাজার সড়কে আরসিসি ঢালাইয়ের কাজ করা হয়। এরপরেই সড়কটির বিভিন্ন জায়গায় ফাটল দেখা দেয়। ঢালাই কাজের সময় এলজিইডির উপ-সহকারী প্রকৌশলী মনিরুজ্জামান উপস্থিত না থাকায় ঠিকাদার নিম্নমানের কাজ করেন। ফলে গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কে এভাবে কাজ করায় চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে পথচারী ও এলাকাবাসীর মাঝে।
বিজ্ঞাপন
জানা যায়, এলজিইডির অধীনে জিওবি প্রকল্পের আওতায় উপজেলার কাশিল বটতলা থেকে বাথুলীসাদী বাজারের মোড় পর্যন্ত প্রায় ৮৩ লাখ টাকা ব্যয়ে সড়কের কাজ পায় প্রগতি এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এরমধ্যে বাথুলীসাদী বাজারের মোড় থেকে ২১০ মিটার সড়ক আরসিসি ঢালাইয়ের চুক্তি হয়।
এদিকে ফাটলের খবরটি প্রকাশ পাওয়ায় তড়িঘড়ি করে ফাটল অংশে কচুরিপানা ও পাটের বস্তা দিয়ে সড়ক ঢেকে দেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
বিজ্ঞাপন
স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী বলেন, কারচুপি করার জন্য গভীর রাতে সড়কে আরসিসি ঢালাই দেওয়া হয়। সকালেই ঢালাইয়ের বিভিন্ন জায়গায় ছোট-বড় ফাটল দেখা দেয়। নিম্নমান উপাদান ব্যবহার করে সড়কের কাজ করায় গাড়ি চলাচল শুরু হলে অল্প দিনেই বেহাল দশা হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
কাশিল ইউনিয়ন কৃষকলীগের সভাপতি নজরুল ইসলাম খান বলেন, দীর্ঘদিন ধরে কাশিল বটতলা-বাথুলীসাদী সড়কে অল্প বৃষ্টিতেই পানি জমে থাকত। ফলে পথচারীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। সড়ক সংস্কার ও আরসিসি ঢালাইয়ের কাজের কথা শুনে মানুষ অনেক খুশি হয়েছিল। এলজিইডির কর্মকর্তারা টাকা খেয়ে ঢালাইয়ের সময় সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করেননি। এখন তারা তড়িঘড়ি করে গ্যারাটিন ঢেলে ফাঁটল বন্ধ করার চেষ্টা করছে।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রগতি এন্টারপ্রাইজের কর্ণধার মো. মজনু মিয়া বলেন, শাহ্ সিমেন্ট কোম্পানির কাছ থেকে রেডিমিক্স দিয়ে ঢালাই করেছি। ঢালাইয়ের চার ঘণ্টার মধ্যে পানি দিতে হয়। এটা টেকনিক্যাল কোনো সমস্যা না। হালকা ফাটল দেখা দিয়েছে। পরে ফাটলে গ্যারাটিন দেওয়া হয়েছে।
উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী আব্দুল জলিল বলেন, এটা রেডিমিক্স দিয়ে ঢালাই করা হয়েছে। ঢালাইয়ের পরে শুকানো শুরু হলে কিছুটা চুল ফাঁড়া দিতে পারে। পরে কিউরিং হলে ঠিক হয়ে যায়। যে কোম্পানির কাছ থেকে আমরা ঢালাই করেছি, এটা তাদের দায়িত্ব। সড়কের কাজে কোনো নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়নি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রফিকুল হক বলেন, বিষয়টি জানতে পেরেছি। পরে এ বিষয়ে প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, ওইখানে যে ঢালাই দেওয়া হয়েছে, সব গাড়ির জন্য লোড নিতে পারবে। মেডিসিন ব্যবহারের কারণে শুরুতে ফাটল দেখা দিলেও পরবর্তীতে এগুলো ঠিক হয়ে যাবে।
অভিজিৎ ঘোষ/এএএ