টানা ৪০ বছর ধরে কাউন্সিলর তোতা
কাউন্সিলর রোস্তম আলী তোতা
টানা ৪০ বছর ধরে কাউন্সিলর হয়ে আসছেন কুড়িগ্রাম পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রোস্তম আলী তোতা (৭০)। সোমবার (২৮ ডিসেম্বর) কুড়িগ্রাম পৌরসভা নির্বাচনে ২ হাজার ৬০০ ভোট বেশি পেয়ে তিনি নির্বাচিত হন। তার বিপক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন দুইজন কাউন্সিলর প্রার্থী।
কাউন্সিলর রোস্তম আলী তোতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তিনি ১০ জুলাই ১৯৫৪ সালে জেলার পৌর এলাকার হিংগনরায় মিস্ত্রি পাড়া গ্রামের একটি সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা মৃত ফজলুল করিম ও মা মৃত রহিমন নেছা। পরিবারের চার ভাই বোনের মধ্যে তিনি চতুর্থ।
বিজ্ঞাপন
শিক্ষা জীবনের শুরুতেই তিনি জেলা শহরের ১নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে নিম্ন মাধ্যমিক সম্পন্ন করেন এবং ১৯৭০ সালে সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও ১৯৭৩ সালে কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ থেকে ইন্টারমেডিয়েট পাস করে একাডেমিক শিক্ষা জীবনের ইতি টানেন।
তিনি খেলাধুলা প্রিয় এবং মুকুল ফৌজসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত। ১৯৭৯ সালে পৌরসভা উপনির্বাচনে কমিশনার পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হন। এরপর ১৯৮১ সালে পৌরসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে কাউন্সিলর পদে জয় লাভ করেন। সেই থেকে বর্তমান (২০২০ সাল) পর্যন্ত টানা ৪০ বছর ধরে কাউন্সিলর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
বিজ্ঞাপন
তার স্ত্রী মোছা. আনোয়ারা বেগম একজন গৃহিণী। স্ত্রী, দুই মেয়ে ও এক ছেলে নিয়ে তার সংসার। বড় মেয়ের বিয়ে হয়েছে। অন্য দুই ছেলে-মেয়ে স্নাতকে পড়ালেখা করে। কুড়িগ্রাম পৌর শহরের মিস্ত্রিপাড়ায় এলাকায় ১২ শতক জমিতে টিনশেড বাড়ি আছে তার।
তোতা ভাই সব সময়ই আমাদের পাশে থাকে। যে কোনো সমস্যায় রাত দিন ২৪ ঘণ্টা যে কোনো সময় তাকে ডাকলে আমরা পাই। উনি সকল শ্রেণী-পেশার মানুষের সঙ্গে চলাচল করেন। এক কথায় বলতে গেলে তিনি খুব ভালো মানুষ।
স্থানীয় নাজমা বেগম ও লিলি বেগম
কাউন্সিলর রোস্তম আলী তোতা বলেন, প্রথমবার পরাজয়ের পর মুকুল ফৌজ নামে একটি শিশু সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে সামাজিক কাজ শুরু করি। সেই থেকে শিশু, নারী, পুরুষ, বৃদ্ধ সবার সঙ্গে হৃদ্যতা গড়ে তুলি।
তিনি আরও বলেন, প্রথম পরাজয়ের পর বুঝতে পারি মানুষের ভালোবাসা ছাড়া জনপ্রতিনিধি হওয়া সম্ভব নয়। তাই মানুষের আস্থা ও ভালোবাসা অর্জনে নিবেদিত প্রাণ হয়ে কাজ শুরু করি।
তোতার স্ত্রীর আনোয়ারা বেগম বলেন, আমার স্বামী প্রথম কাউন্সিল হওয়ার ৬ মাস পর আমাকে বিয়ে করেন। সেই থেকে আমি আমার স্বামীর পাশে আছি। আমাদের মাঝে এখন পর্যন্ত কোনো ঝগড়া বিবাদ হয়নি। জনগণের ভালোবাসায় তিনি দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে নির্বাচিত হয়ে আসছেন।
তোতার মেয়ে তহিদা পারভীন বলেন, আমরা জন্মের পর থেকে দেখছি বাবা কাউন্সিলর। নির্বাচনের সময় সবাই যখন ভোট দিতে যায়, আমরা বলি কত বছর হলে ভোট দিতে পারব। ২০১৫ সালে প্রথম বাবাকে ভোট দিয়েছি, এবারও দিলাম।
তিনি আরও বলেন, আমার বড় বোনের মেয়ে তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ছে। সেও তার নানাকে বড় হয়ে ভোট দিতে চায়। আপনারা দোয়া করবেন আল্লাহ পাক যেন ওনাকে নেক আয়াত দান করেন। বাবা কাউন্সিল পদে ৪০ বছরে পা রাখলেন। আপনাদের কাছে দোয়া চাই ৫০ বছরে পা রাখলে আমরা শুভজয়ন্তী পালন করব ইনশাআল্লাহ।
এসপি