রাকিব ইসলাম ও জিনিয়া ইসলাম মীম

পটুয়াখালীতে পারিবারিক কলহে স্বামীকে কুপিয়ে হত্যার পর থানায় হাজির হওয়া গৃহবধূকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। নিহতের বাবা বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন। মামলায় গৃহবধূ জিনিয়া ইসলাম মীমকে (১৯) একমাত্র আসামি করা হয়েছে।

শনিবার (২ মার্চ) সন্ধ্যায় মুঠোফোনে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পটুয়াখালী সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জসীম উদ্দিন। তিনি জানান, পরিবারিক কলহে এমন ঘটনা ঘঠেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে মামলার তদন্ত চলছে। তদন্তে প্রকৃত কারণ বেড়িয়ে আসবে।

এর আগে শুক্রবার সন্ধ্যায় পটুয়াখালী পৌরসভার কলাতলা আকন বাড়িতে স্বামী রাকিব ইসলামকে (৩০) ধারালো বটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যার পর থানায় আত্মসমর্পণ করে ঘাতক স্ত্রী জিনিয়া ইসলাম মীম। খবর পেয়ে ভাড়া বাসা থেকে মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

জানা গেছে, জিনিয়া ইসলাম মীম সদর উপজেলার ইটবাড়িয়া গ্রামের মো. জুয়েলের মেয়ে। আর নিহত রাকিব ভোলার লালমোহন উপজেলার ফুলবাগিচা গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে। ছয় মাস আগে প্রেমের সম্পর্ক থেকে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন মীম-রাকিব। বিয়ের পর পটুয়াখালী শহরের কলাতলা (তৃতীয় লেন) আকন বাড়ি সড়কে রাকিবের বাবা নজরুল ইসলামের ভাড়া বাসায় ওঠেন তারা। সেখানে রাকিব ও মীমের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া-বিবাদ হতো। তাদের কলহের কারণে রাকিবের মা বাসা ছেড়ে তার আরেক ছেলের বাসায় চলে যান। মাদকাসক্তি, বেকারত্ব আর পরকীয়ার বিরোধে এ ঘটনা ঘটছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া করে বাবার বাড়ি চলে গিয়েছিল মীম। শুক্রবার শ্বশুরবাড়ি থেকে স্ত্রীকে নিয়ে বাসায় ফেরেন রাকিব।

নিহত রাকিবের বাবা নজরুল ইসলাম বলেন, আসরের নামাজের সময় রাকিব ও মীম বাসায় আসে। আমি আসরের নামাজ পড়তে গেছি। নামাজ পড়ে এসে দেখি তারা বাসায়। আমার ছোট ছেলে এসে বলে বড় ভাইয়ের (রাকিব) গলার মধ্যে কেমন যেন শব্দ করে। এ খবর শুনে আমি মীমদের ঘরে গেলে মীম জানায় রাকিব ঘুমাচ্ছে। এ কথা শুনে ফিরে আসি। পরে আমি মাগরিবের নামাজ পরে ফিরে আসার পর ছোট ছেলে জানায়, রাকিবকে মীম মেরে ফেলেছে।

তিনি বলেন, শুক্রবার দুপুরে আমার বাবা মারা যান। শনিবার সকালে মরদেহ দাফনে ভোলা যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। এরই মধ্যে সন্ধ্যায় ছেলেকে খুন করল পুত্রবধূ।

পটুয়াখালীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আহমাদ মাঈনুল হাসান বলেন, হত্যার বিষয়টি আশপাশের লোকজন টের পায়নি। খুন হওয়া ব্যক্তির ছোট ভাই ঘটনাস্থলের একটু দূরে মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন, তিনিও বুঝতে পারেননি। কেন, কী কারণে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে তা জানার চেষ্টা চলছে।

সৈয়দ মেহেদী হাসান/আরএআর