পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার দক্ষিণ চড়ক গাছিয়ার কচুবাড়িয়া গ্রামের মো. এনায়েত হোসেন নামের এক খামারির মাছের ঘেরে রাতের আঁধারে বিষ প্রয়োগ করে মাছ নিধন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত রোববার (১৮ এপ্রিল) রাতের কোনো একসময় এ ঘটনা ঘটানো হয়।

এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল) থেকে মঠবাড়িয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে একটি মামলা করার জন্য ঘুরছেন ভুক্তভোগী মো. এনায়েত হোসেন। কিন্তু পুলিশ তার মামলা নেয়নি বলে জানান তিনি।

মো. এনায়েত হোসেন উপজেলার দক্ষিণ চড়ক গাছিয়ার কচুবাড়িয়া গ্রামের মৃত আবদুল আজিজ হাওলাদারের ছেলে।

জানা যায়, এনায়েত তিনি পেশায় ছিলেন একজন দিনমজুর। তবে নিজের জমানো কিছু পুঁজি ও ব্যাংকে জমি বন্ধক রেখে সমিতি থেকে ২ লক্ষাধিক টাকা ঋণ নিয়ে শুরু করেছিলেন মাছচাষ। দুই বছর আগে কেনা ৩৩ শতক জমির ওপর মাছের ঘের গড়ে তুলেছিলেন। কিন্তু কেনা জমি নিয়ে ও জমিতে যাওয়ার রাস্তা নিয়ে প্রতিপক্ষের সঙ্গে ছিল ঝামেলা। সেই পূর্বশত্রুতার জের ধরেই মাছের ঘেরে রাতের আঁধারে বিষ ঢালা হয় বলে ধারণা করা হয়।

এ বিষয়ে এনায়েত হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার ভাই আমাকে জানায় ঘেরের সব মইরা গেছে। তাই আমি তাড়াতাড়ি আইয়া দেহি যে ঘেরের সমস্ত মাছ ফুলের মতো ভাইসা গেছে। অনেক ঋণ কইরা মাছ ফালাইছি। আমার সব সম্বল দিয়ে আমি এতটুকু করছি, যাতে পরিবার নিয়ে ভালো থাকতে পারি। এখন আমি পথে বসে গেছি।

আমার শত্রু আছে, জমি কেনা, জমির হাঁটার পথ নিয়ে ঝামেলা আছে একটি পক্ষের সঙ্গে। গ্রামবাসী শত শত লোক আমার এই ঘেরের মরা মাছ দেখেতে আসছে, কিন্তু একটা গ্রুপ আমাকে দেখতেও আসে নাই, খোঁজও নেয় নাই। আমি থানায় মামলা দিতে গেছি। কিন্তু পুলিশ আমার মামলা নেয়নাই। একটা অভিযোগ নিছে আর বলেছে তদন্ত করে কী ব্যবস্থা নেবে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।

প্রতিবেশী নূর মিয়া বলেন, সকালবেলা এসে দেখি সব মাছ মরে আছে। ঘেরে বিষ এমন মারা মারছে, ঘ্রাণে অস্থির হয়ে গেছি। এনায়েত মিয়া অনেক টাকা খরচ করে মাছগুলো চাষ করেছেন। এমন ঘটনা খুবই ন্যক্কারজনক। এ ঘটনার তদন্ত করে দোষী ব্যক্তির বিচার হওয়া উচিত।

এ বিষয়ে সাপলেজা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য মাহবুব আলম বলেন, আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এনায়েত দুই বছর পর্যন্ত এই মাছগুলো চাষ করছিল। মাছগুলো শেষ পর্যন্ত বিষ দিয়ে মারা হয়েছে। কে বা কারা রাতের আঁধারে এ কাজটি করছে। কাজটা খুবই খারাপ হয়েছে। এটার দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলব। 

ইউপি চেয়ারম্যান মো. মিরাজ মিয়া বলেন, শত্রুতা করে এতগুলো মাছ মারা হয়েছে। শুনেছি এনায়েত থানায় জানিয়েছে। আমরা তদন্ত করছি। উদ্ধার করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আমি ক্ষতিগ্রস্তকে সহযোগিতা করব।

এ ব্যাপারে মঠবাড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আ জ ম মাসুদুজ্জামান মিলু ঢাকা পোস্টকে বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত এনায়েত থানায় অভিযো দিয়েছেন। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। মামলা না নেওয়ার প্রসঙ্গে ওসি বলেন, যে বিষয়টি কেউ দেখে নাই, সেই ব্যাপারে মামলা হয় কী করে? তার জন্য যেটা ভালো হয়, তেমন অভিযোগ নেওয়া হয়েছে।

মো. আবীর হাসান/এনএ