পাবনার আমিনপুর থানার সাগরকান্দির চরকেষ্টপুর গ্রামে স্বামীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের মামলায় ৪ আসামি আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন। তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) বিকেলে পাবনার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করেন।

আসামিরা হলেন-  চর কেষ্টপুর গ্রামের মো. শরীফুল (২৪), রাজীব সরদার (২১), লালন সরদার (২০) ও সিরাজুল ইসলাম (২৩)।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও আমিনপুর থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আবদুল কুদ্দুস বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, আসামিরা আদালতে আত্মসমর্পণ করলে বিচারক তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়েছেন। আমরা এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে আদালতের মাধ্যমে কাগজপত্র পাইনি, পেলে আদালতের মাধ্যমে তাদের রিমান্ড আবেদন করা হবে।

মামলার বাদী ও ভুক্তভোগী নারীর স্বামী বলেন, আমিও শুনেছি চারজনকে নাকি কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আমি আসামিদের উপযুক্ত শাস্তি চাই। আমরা এখনো নিরাপত্তাহীনতায় আছি। মাঝে মাধ্যে কিছু অচেনা লোকজন আমার গ্রামে এসে আমার ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়ে যাচ্ছে। নানা কথাবার্তা ছড়িয়ে দিয়ে যাচ্ছে।

প্রসঙ্গত, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি মধ্যরাতে আমিনপুরের সাগরকান্দি ইউনিয়নের চরকেষ্টপুর গ্রামে কাদেরিয়া তরিক্বাপন্থিদের ওয়াজ মাহফিলের আয়োজন করা হয়। মাহফিলের ডেকোরেশনের কাজ করছিলেন ভুক্তভোগী নারীর স্বামী। টাকার প্রয়োজনে ওই রাতে তার স্বামীর কাছে যান তিনি। সেখানে ওয়াজ শুনে রাত ১২টার দিকে পাশের তার এক আত্মীয়ের বাড়িতে যাওয়ার পথে তার গতিরোধ করেন ৬ যুবক। তাকে নানা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। একপর্যায়ে তার স্বামীকে অস্ত্র ও ব্লেডের মাধ্যমে জিম্মি করে ওই নারীকে ভুট্টা ক্ষেতে নিয়ে দুইজন পালাক্রমে ধর্ষণ করেন। ওই নারীর স্বামী তাদের কাছ থেকে ছুটে এসে স্থানীয়দের লোকজনকে বললে তারা দলবদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযুক্তদের একজনকে আটক করে গণধোলাই দেন এবং বাকিরা পালিয়ে যান। এ সময় ওই নারীকে স্থানীয় পল্লী চিকিৎসকের কাছে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

ঘটনার একদিন পর ২৪ ফেব্রুয়ারি ৬ জনের নামে মামলা করেন ভুক্তভোগী নারীর স্বামী। এ ঘটনার ১৩ দিনেও আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। ১৪ দিনের মাথায় চারজন আদালতে আত্মসমর্পণ করলে তাদের কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। এখনো দুই আসামি পলাতক রয়েছেন।

রাকিব হাসনাত/আরএআর