শেরপুরে চিচিঙ্গা চাষ করে বিপাকে চাষিরা। লাভ তো দূরের কথা, খরচের টাকাও উঠছে না তাদের। বাজারে চিচিঙ্গার দাম অনেক কম থাকায় পাইকাররাও কিনতে আগ্রহী হচ্ছেন না। এমনকি চিচিঙ্গা জমি থেকে উঠানো শ্রমিকের টাকাও ঘর থেকে ভর্তুকি দিতে হচ্ছে। ফলে অনেক চাষি ক্ষেত থেকে চিচিঙ্গা তুলে ফেলে দিচ্ছেন। 

সরেজমিনে গিয়ে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার সারিকালিনগর এলাকায় গজারমারি বিলসহ আশপাশের বিভিন্ন ইউনিয়নে চিচিঙ্গা চাষ করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং ক্ষেতে তেমন কোনো রোগ ও পোকা-মাকড়ের আক্রমণ না থাকায় বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে বাজারে দাম না থাকায় চিচিঙ্গা বিক্রি নিয়ে বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। প্রতি বছর এ সময় পাইকারি বাজারের চিচিঙ্গা কেজি ৩০ থেকে ৩৫ টাকা থাকলেও এ বছর বিক্রি করতে হচ্ছে ৭ থেকে ৮ টাকায়। এতে লোকসান গুনতে হচ্ছে চাষিদের। বাজারে দাম কম থাকায় পাইকাররা চিচিঙ্গা শুধু দাম করে চলে যাচ্ছেন। 

ঝিনাইগাতী সদর ইউনিয়নের সারিকালিনগর এলাকার চিচিঙ্গা চাষি খোরশেদ আলম বলেন, ‘আমি বেশ কয়েক বছর ধরে গজারমারি বিলে চিচিঙ্গা চাষ করছি। প্রতি বছরই চিচিঙ্গা চাষ করে লাভবান হই। এ বছরও প্রায় এক একর জমিতে চিচিঙ্গা চাষ করেছি। ক্ষেতে কোনো পোকা-মাকড়ের আক্রমণ না থাকায় বাম্পার ফলন হয়েছে। কিন্তু বাজারে দাম পাচ্ছি না। একদিকে চিচিঙ্গা বিক্রি করতে পারছি না, অন্যদিকে দেনার টাকা পরিশোধের জন্য পাওনাদারা তাগিদ দিচ্ছেন। আমাদের খেতের চিচিঙ্গা তুলে তুলে ফেলে দিতে হচ্ছে। ফলন বেশি হওয়ায় চিচিঙ্গা না তুলে মাচা ভেঙ্গে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’

একই উপজেলার ঝিনাইগাতী সদর ইউনিয়নের সারি কালিনগর এলাকার চাষি মো. সামিউল হক বলেন, এ বছর আমি ৩ একর জমিতে চিচিঙ্গা আবাদ করেছি। গত বছর এ সময় পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি চিচিঙ্গা বিক্রি করে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা পেতাম। কিন্তু এ বছর একই সময় পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি ৭ থেকে ৮ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। এতে আমাদের খরচের টাকাও উঠছে না।

এ ব্যাপারে ঝিনাইগাতী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন দিলদার বলেন, এ বছর ঝিনাইগাতীতে ২০ হেক্টর জমিতে চিচিঙ্গা চাষ হয়েছে। ক্ষেতে পোকা-মাকড়ের আক্রমণ না থাকায় ব্যাপক ফলন হয়েছে। ঝিনাইগাতীর চিচিঙ্গা বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। যে সকল উদ্যোক্তা চিচিঙ্গা বিদেশে রপ্তানি মাধ্যমে লাভবান হতে চান, তারা কৃষি অফিসে যোগাযোগ করতে পারেন। যথাযথ পরামর্শ দেওয়ার চেষ্টা করব।

 এএএ