কুমিল্লায় পারভেজ হোসেন (৩০) নামে এক ছাত্রদল কর্মীকে হত্যার দায়ে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানসহ ১৪ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৫ মাসের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে। সোমবার (২২ এপ্রিল) বিকেলে কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক নাসরিন জাহান এ রায় দেন।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার ১নং কালিরবাজার ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান সেকান্দর আলী, কালির বাজার এলাকার সাদ্দাম হোসেন, কালির বাজার ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, একই এলাকার মফিজ ভান্ডারি, কাওছার হোসেন, মো. রিয়াজ, বিল্লাল হোসেন, কামাল হোসেন, ইব্রাহিম খলিল, আব্দুল কাদের, মেহেদী হাসান রুবেল, জয়নাল আবেদীন, আনোয়ার হোসেন ও জাহিদ হাসান।  এদের মধ্যে কাওছার, রিয়াজ এবং বিল্লাল পলাতক রয়েছেন।

কুমিল্লার পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম সেলিম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মামলার বরাত দিয়ে তিনি জানান, গত ২০২০ সালের ১০ জুন বিকেলে কমলাপুর নিজ বাড়ি থেকে সৈয়দপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের দিকে যাচ্ছিলেন ছাত্রদল কর্মী পারভেজ। এ সময় দণ্ডপ্রাপ্তরা ছিনতাইয়ের অভিযোগ এনে তার পথরোধ করে হত্যার উদ্দেশ্যে কমলাপুর বাজার সংলগ্ন দিঘির পূর্ব পাড়ে নিয়ে দেশীয় অস্ত্র, হকিস্টিক ও চাকু দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করে মারাত্মক জখম করে ফেলে চলে যায়। পারভেজ কমলাপুর এলাকার আ. মবিন ওরফে মমিনের ছেলে।

পরে স্থানীয়রা ৯৯৯ ফোন করে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে রক্তাক্ত অবস্থায় পারভেজকে উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার ক্যান্টনমেন্ট পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক মাহবুবুর রহমান বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

ওই মামলার তদন্ত করেন কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মাহমুদুল হাসান রুবেল। পরে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) উপ-পরিদর্শক সিরাজ উদ্দিন মামলার তদন্ত করেন। তদন্ত শেষে ১৪ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন সিআইডির তদন্ত কর্মকর্তা। পরে মামলাটি বিচারে এলে৩০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ ও যুক্তিতর্ক শেষে ১৪ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত। রায় ঘোষণার সময় ১১ আসামি কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। তিন আসামি পলাতক রয়েছেন।

আরিফ আজগর/আরএআর