পরাজিত ও বিজয়ী চেয়ারম্যান প্রার্থীর আধিপত্য বিস্তার নিয়ে কিছুদিন পরপরই শরীয়তপুরের বিলাশপুরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। কয়েক সপ্তাহ আগে দুই পক্ষের বোমা বিস্ফোরণে একজন নিহত হলেও আবারও তারা জড়িয়েছে সংঘর্ষে। এ ঘটনায় চারজন গুরুতর আহত ও দুইজনকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার বিলাশপুর ইউনিয়নের সারেংকান্দি গ্রামে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিলাশপুর ইউনিয়নের বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস ব্যাপারীর সঙ্গে তার নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বী আব্দুল জলিল মাদবরের দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের। বছরখানেক আগে দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে নিয়মিত সংঘর্ষ বাঁধলেও মাঝে কিছুদিন তারা শান্ত ছিল। কিন্তু গত ২৭ মার্চ মিয়া চান মুন্সী কান্দি গ্রামের দুই চাচাতো ভাইয়ের মাঝে জমি নিয়ে মারামারি শুরু হয়। এই মারামারির বিষয়টি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে চলতে থাকে দফায় দফায় ককটেল বিস্ফোরণ ও সংঘর্ষ। ওই সময়কার সংঘর্ষে ককটেলের আঘাতে সজীব মুন্সী নামের এক যুবক গুরুতর আহত হন। ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই যুবকের মৃত্যু হলে আবারও উত্তেজিত হয়ে পড়ে দুই পক্ষের লোকজন। এরপর আজ বুধবার সকাল থেকে দুই পক্ষের সমর্থকরা আবারও সংঘর্ষে জড়ায়।

সংঘর্ষের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে। ওই ভিডিওতে দেখা যায়, দুই পক্ষের সমর্থকরা ফসলি জমির মাঠে নেমে ককটেল ও হাতবোমা ছুড়ছেন। সর্বশেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী সংঘর্ষে দুই পক্ষের চারজন আহত হয়েছে। আহতদের জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি করা হলে চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের ঢাকায় প্রেরণ করেন। সংঘর্ষের ঘটনায় বিলাশপুরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে। পুলিশ উভয় পক্ষের দুইজনকে আটকের কথা জানালেও তাদের নাম প্রকাশ করেনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী জলিল মাদবর ঢাকা পোস্টকে বলেন, ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে কুদ্দুস ব্যাপারীর সমর্থকরা আমাদের লোকজনের ওপর হামলার প্রস্তুতি নিয়েছে। সকালে শাহাবুদ্দিন নামে আমার এক সমর্থকের হাত-পা ভেঙে দিয়েছে কুদ্দুস ব্যাপারীর সমর্থকরা। পরে আমাদের লোকজন খবর পেয়ে তাদের প্রতিরোধ করেছে। এক ব্যক্তির মৃত্যুর মিথ্যা গুজব রটিয়ে আমাদের লোকজনের বাড়িঘরে হামলা-ভাঙচুর চালিয়ে লুটপাট করেছে তারা। আমি এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করবো।

তবে ঢাকা পোস্টকে বিলাশপুর ইউনিয়ন পরিষদের বিজয়ী চেয়ারম্যান কুদ্দুস ব্যাপারী বলেন, আমাদের লোকজনকে মারার জন্য অন্য এলাকা থেকে লোকজন ভাড়া করে এনেছে জলিল মাদবর। সকালে তুচ্ছ একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ সৃষ্টি করে তারা। আমার এক লোক গুরুতর আহত হয়েছে। সে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। আমি থানায় অভিযোগ করবো।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নড়িয়া সার্কেল) আহসান হাবীব ঢাকা পোস্টকে বলেন, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে চারজন আহত হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে দুইজনকে আটক করেছে। এ ছাড়া ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এখন পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে। এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সাইফ রুদাদ/এমজেইউ