পিরোজপুরে তাপদাহে বোরো ধানে চিটা
পিরোজপুরে তীব্র তাপদাহ ও অনাবৃষ্টির কারণে শুকিয়ে যাচ্ছে শত শত হেক্টর ফসলের মাঠ। খাল-বিলে পানি কমে যাওয়ায় ফসলের ক্ষেত ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। রোদের তাপে পুড়ে চিটা হয়ে যাচ্ছে বোরো ধান। এতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা।
জেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলায় চলতি মৌসুমে ২৪ হাজার ৫৩৩ হেক্টর জমিতে ১ লাখ ১৫ হাজার ৫৫০ মেট্রিক টন বোরো ধান আবাদ হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এবার ১ হাজার হেক্টর জমিতে বেশি ধান চাষ হয়েছে। মাঠপর্যায়ের ৭ হাজার ৩৬০ হেক্টর জমির ধান কাটা হয়ে গেছে। এ বছর গড় ফলন হয়েছে ৪.৭১ মেট্রিক টন। কৃষিশ্রমিকের কোনো ঘাটতি নেই। তাছাড়াও প্রত্যেকটি উপজেলায় কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন রয়েছে।
বিজ্ঞাপন
এদিকে জেলার বিভিন্ন স্থানে গিয়ে দেখা গেছে, প্রয়োজনীয় পানির অভাবে ও তীব্র রোদের তাপে ফসল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। মাটি ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। আবার অনেক ক্ষেতে জোয়ারের পানি ঢুকলেও লোনা পানির কারণে হলদে হয়ে যাচ্ছে গাছগুলো। এতে এলাকার কৃষকরা লোকসানের মুখে পড়বেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ বছর ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত জেলায় কোনো বৃষ্টিপাত না হওয়ায় ধান চিটা হয়ে যাচ্ছে। তীব্র খরতাপে বিপাকে পড়েছেন চাষিরা।
বিজ্ঞাপন
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা জানান, রোদের তাপে ধান সাদা হয়ে গেছে। তার মধ্যে কোনো শষ্য নেই। এ বছর কোনো বৃষ্টি নেই, পানিও নেই। এর মধ্যে গরম বাতাস। সেই বাতাসে সব ভালো ফসল পুড়ে নষ্ট হচ্ছে।
পিরোজপুর জেলা কৃষি কর্মকর্তা চিন্ময় রায় জানান, পিরোজপুর জেলায় ২৩ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। তবে ২৪ হাজার ৫৩৩ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। জেলায় ২৩ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১ লাখ ২ হাজার ১০২ মেট্রিক টন। আবহাওয়া প্রতিকূলে থাকায় সেখানে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ১ লাখ ১৫ হাজার ৫৫০ মেট্রিক টন ধান আবাদ হয়েছে।
তিনি আরও জানান, মাঠে ধানের অবস্থা মোটামুটি ভালো। কৃষকরা ধান কাটছেন, কৃষি শ্রমিকের কোনো ঘাটতি নেই। তাছাড়া প্রত্যেকটি উপজেলায় কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন আছে। ধানের ফুল থাকা অবস্থায় হিট ওয়েভের কারণে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় পাঁচ হেক্টর জমির ফসলের ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে বিপিএইচ ও মাজা পোকার আক্রমণে ধানের ক্ষতি হয়েছিল। আশা করি আগামী ১৫ দিনের মধ্যে কৃষক সব ধান কেটে রোগ-বালাই ছাড়াই ঘরে তুলতে পারবেন।
আবীর হাসান/আরএআর