নিহত সৈকত

বিজয়ী ও পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থীর আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় শরীয়তপুরের জাজিরায় প্রাণ হারিয়েছেন আরও এক যুবক। সৈকত সরদার (১৯) নামের এ যুবকের মৃত্যু সংবাদ ছড়িয়ে পড়ার পর সেখানে আবারও উত্তেজনা বিরাজ করছে। তবে যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

শনিবার (২৭ এপ্রিল) ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে সৈকতের মৃত্যু হয়েছে বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছে পুলিশ।

নিহত সৈকত শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার বিলাশপুর ইউনিয়নের সারেংকান্দি এলাকার মুলাই বেপারি কান্দি গ্রামের কাশেম সরদারের ছেলে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিলাশপুর ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস ব্যাপারীর সঙ্গে তার নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বী আব্দুল জলিল মাদবরের দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের। বছরখানেক আগে দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে ককটেলসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে নিয়মিত সংঘর্ষ বাঁধলেও মাঝে কিছুদিন তারা শান্ত ছিল। কিন্তু গত ২৭ মার্চ মিয়া চান মুন্সী কান্দি গ্রামের দুই চাচাতো ভাইয়ের মাঝে জমি নিয়ে মারামারি শুরু হয়। মারামারির বিষয়টি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে চলতে থাকে দফায় দফায় ককটেল বিস্ফোরণ ও সংঘর্ষ। ওই সময়কার সংঘর্ষে ককটেলের আঘাতে আব্দুল জলিল মাদবরের সমর্থক হিসেবে পরিচিত সজীব মুন্সী নামে এক যুবক গুরুতর আহত হয়ে ঢাকার একটি হাসপাতালে মারা যায়।

সজীব মুন্সীর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে গত বুধবার (২৪ এপ্রিল) উভয় পক্ষের লোকজন উত্তেজিত হয়ে এক পর্যায়ে আবারো সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে আব্দুল কুদ্দুস ব্যাপারীর সমর্থক সৈকত সরদারসহ চারজন ককটেল ও হাত বোমার আঘাতে গুরুতর আহত হন। আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়।

ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনদিন চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় শনিবার দুপুরে মারা যায় সৈকত সরদার। তার মৃত্যুর সংবাদ বিলাশপুর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে আবারো ভেতরে ভেতরে উত্তেজিত হয়ে পড়ে উভয় পক্ষের লোকজন। সৈকত সরদারের মৃত্যু সংবাদ পেয়ে পুলিশ বিলাশপুর এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করে রেখেছে।

বিষয়টি নিয়ে জাজিরা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিলাশপুরের ঘটনায় পুলিশ বাকরুদ্ধ, হতভম্ব ও শোকাহত। কয়েক দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটলেও এখনো পর্যন্ত থানায় কেউ মামলা করতে আসেনি। সৈকত সরদার মারা যাওয়ার পর এখনো পর্যন্ত কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। তবে যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বিলাশপুরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করে রাখা হয়েছে। সৈকত সরদারের মৃত্যুতে যদি তার স্বজনরা মামলা দায়ের করেন, তাহলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সাইফ রুদাদ/এমটিআই