নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলা সদরের জাহাঙ্গীরপুর সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ নাজিম উদ্দিন মিঞা দুলালের বিরুদ্ধে সরকারি রাস্তা কেটে স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন তার বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করলেও নোটিশকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে জোরেশোরে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, পাকা রাস্তার দক্ষিণ দিকের ইন্ড এজিং কেটে ফেলে পিলারের বেইস ঢালাই দেওয়া হয়েছে। পাকা রাস্তা কেটে নির্মাণ করা ঢালাইয়ের ওপর কলাম নির্মাণের শার্টারিং করা হচ্ছে।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, দীর্ঘদিন আগে উপজেলা প্রকৌশল অধিদফতর সদরের মাতাজী রোডে মন্দিরের পাশে কায়ন্থপাড়ায় পাকা রাস্তা নির্মাণ করে। মন্দিরের পাশেই জাহাঙ্গীরপুর সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ নাজিম উদ্দিন মিঞা দুলাল পাকা বাড়ি নির্মাণ করেন। সম্প্রতি তিনি পাকা রাস্তা কেটে তার ওপর বাউন্ডারি ওয়ালের ফাউন্ডেশন দেন। এভাবে বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ করা হলে রাস্তাটি সংকুচিত হয়ে পড়বে। এ ছাড়া ভবিষ্যতে রাস্তাটি দুধারে চওড়া করতে চাইলে তা আর সম্ভব হবে না বলে জানান তারা।

তারা দাবি করেন, সড়কের পাশে যেকোনো স্থাপনা নির্মাণ করতে কমপক্ষে দেড় ফুট করে জায়গা রাখতে হয়। সেই হিসাবে রাস্তা থেকে দেড় ফুট ও বিল্ডিংয়ের দেড় ফুট মোট তিন ফুট দূরে স্থাপনা করার নিয়ম। কিন্তু অধ্যক্ষ সব নিয়ম-কানুনকে পদদলিত করে নিজের ইচ্ছেমতো স্থাপনা নির্মাণ করছেন।

জানতে চাইলে অধ্যক্ষ নাজিম উদ্দিন মিঞা দুলাল রাস্তার ইন্ড এজিং-সংলগ্ন ঢালাই দেওয়ার কথা স্বীকার করে ঢাকা পোস্টকে বলেন, রাস্তাটি আমার জমির ওপর দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। তাই আমিও রাস্তার ওপর নির্মাণ কাজ করছি।

মহাদেবপুর সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মুহা. মাহবুবুর রহমান ধলু ঢাকা পোস্টকে জানান, রাস্তাটি এলজিইডির (উপজেলা প্রকৌশল অধিদফতর)। রাস্তা ঘেঁষে কোনো স্থাপনা নির্মাণ বৈধ হবে না বলেও তিনি জানান।

মহাদেবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিজানুর রহমান মিলন ঢাকা পোস্টকে জানান, রাস্তা-সংলগ্ন স্থাপনা কোনোভাবেই নির্মাণ করা যাবে না। বিষয়টি দেখার জন্য তিনি উপজেলা প্রকৌশলীকে জানিয়েছেন বলে জানান।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী সুমন মাহমুদ ঢাকা পোস্টকে জানান, মঙ্গলবার (২৭ এপ্রিল) বিষয়টি সরেজমিনে পরিদর্শন করে রাস্তার ওপর ব্যক্তিগত স্থাপনা নির্মাণের বিষয়টির প্রমাণ পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে ওই অধ্যক্ষকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু নোটিশ পাওয়ার পর নির্মাণ বন্ধ না করে বরং আরও জোরেশোরে নির্মাণ করা চালানো হচ্ছে।

শামীনূর রহমান/এনএ