বাজারে আসা লিচুর জাতটি অপরিপক্ব
জ্যৈষ্ঠ মাস আসতে এখনো ১০ দিন বাকি। ‘অতিথি’ ফল-খ্যাত লিচু পাকবে আরও দুই সপ্তাহ পর। কিন্তু এখনই রাজশাহীর বাজারে মিলছে রঙিন লিচু। প্রতি ১০০ লিচু বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকায়। তবে ক্রেতারাও সচেতন। কিনছেন দেখেশুনে। তবে রাজশাহীতে লিচুর বিকিকিনি এখনো জমে ওঠেনি।
রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্র জানাচ্ছে, রাজশাহীর বাজারে যে লিচু পাওয়া যাচ্ছে, তা মূলত বারি লিচু-১। এটি রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্রের উদ্ভাবিত জাত। আগাম বারি-১ জাতের লিচু পাকবে আগামী মে মাসের মাঝামাঝি।
এই তথ্য ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আলীম উদ্দিন।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, এটি লিচুর স্থানীয় জাত। এটি উন্নত লিচুর জাতগুলোর মধ্যে একটি। মূলত মে মাসের প্রথম দিকে এই জাতের লিচুর হালকা রং ধরে। দিন যত গড়াবে, রং ততই আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে। ফল পরিপক্ব হয় মে মাসের মাঝামাঝি নাগাদ। এখন যে লিচু বাজারে আসছে, তা স্বাদে কিছুটা টক হওয়ার কথা। পরিপক্ব লিচু আকর্ষণীয় ও সুমিষ্ট।
বিজ্ঞাপন
আলীম উদ্দিন বলেন, বারি লিচু-১ ছাড়াও রাজশাহী অঞ্চলে উন্নত মানের জাত হিসেবে পরিচত বোম্বাই ও চায়না-৩ লিচু উৎপাদন হয়। এসব লিচুর ফলনও বেশি, আবার আকারেও বড়। রঙেও আকর্ষণীয়। লিচু অতিথি ফসল। মে মাসের মাঝামাছি থেকে শুরু করে জুন মাসের মাঝমাঝি পর্যন্ত এই ফল থাকবে।
এদিকে নগরীর সাহেববাজার এলাকায় ভ্যানে লিচু বিক্রি করছিলেন মনির হোসেন (৫২)। তিনি ঢাকা পোস্টকে জানান, এই লিচু স্থানীয় বাগানের। স্বাদে একটু টক। আরও কিছুদিন পর মিষ্টি লিচু পাওয়া যাবে। এখনকার বাজারে প্রতি ১০০ লিচু বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকায়। লিচুর আমদানি বাড়লে দামও কমবে বলে জানিয়েছেন এই খুচরা ব্যবসায়ী।
তবে কেবল মুনাফার জন্যই চাষি ও বাগানমালিক অপরিপক্ব লিচু বাজারে তুলছেন বলে জানিয়েছেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক কেজেএম আবদুল আউয়াল। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, এই লিচু পাকতে আরও দুই সপ্তাহের মতো সময় লাগবে।
তিনি বলেন, এখন বাজারে যে লিচু পাওয়া যাচ্ছে, তা প্রাকৃতিকভাবেই রং ধরেছে। কৃত্রিমভাবে পাকানো নয়। এই লিচুর আসল স্বাদ পেতে আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।
এ বছর রাজশাহী জেলায় লিচুবাগান রয়েছে ৫১৯ হেক্টর। প্রতি হেক্টরে সাত টন হারে ফলন হওয়ার কথা। কিন্তু এবার যথাযথ নিম্ন তাপমাত্রা না পাওয়ায় লিচুর ফলন কিছুটা কম হতে পারে বলে জানিয়েছেন এই কৃষি কর্মকর্তা।
ফেরদৌস সিদ্দিকী/এনএ