ফাইল ছবি

চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় ইউনাইটেড মেডিকেল সেন্টারে সিজারের পর নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। সিজার করতে গিয়ে নবজাতকের ভুঁড়ি বের করার অভিযোগ উঠেছে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। রোববার (৩ জানুয়ারি) বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, আলমডাঙ্গার মাজু গ্রামের সাগর আলীর স্ত্রী রুমা খাতুনের প্রসব বেদনা ওঠে। শুক্রবার (১ জানুয়ারি) সকালে তাকে ইউনাইটেড মেডিকেল সেন্টারে ভর্তি করা হয়। ওই দিন দুপুরে প্রসূতির সিজার করা হয়।

সাগর আলী বলেন, সিজার করার সময় নবজাতকের পেট কেটে নাড়ি ভুঁড়ি বের হয়ে যায়। ওই অবস্থায় আমার সন্তানকে না দেখিয়ে গোপন কক্ষে ৩ ঘণ্টা রেখে দেয় তারা। এরপর তার মায়ের কাছে দেয়া হয়। ভূমিষ্ঠের পর নাড়িভুঁড়ি বের হয়ে আসার কারণে সন্তানের অবস্থা ক্রমেই খারাপ হতে থাকে। শুক্রবার রাতে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ তাকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নেয়। আমার সন্তানকে কোনোভাবেই বাঁচানো সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দেন সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক। পরে আমার সন্তানকে বাড়িতে ফেরত নিয়ে আসি।

সাগরের ফুফাতো ভাই উজ্জ্বল হোসেন বলেন, শনিবার বিকেলে বাড়ি থেকে নবজাতককে আবারও আমরা কুষ্টিয়া সনো সেন্টারে নিয়ে যাই। সেখানে যাওয়ার পর রাতে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। 

তিনি আরও বলেন, আলমডাঙ্গার ইউনাইটেড মেডিকেল সেন্টারের মালিক নাজমুল হক নিজেই অপারেশন করেছিলেন। তবে শর্ত অনুযায়ী একজন বিশেষজ্ঞ সার্জনকে দিয়ে সিজার করানোর কথা ছিল। তারা এটা করলে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটত না।

এ ব্যাপারে ইউনাইটেড ক্লিনিকের মালিক উপসহকারী মেডিকেল অফিসার নাজমুল হক বলেন, প্রসূতির অপারেশন করেছেন ডা. বিপাশা। জন্মের সময় ত্রুটির কারণে শিশুর নাড়িভুঁড়ি বের হয়ে আসে। এটা ডাক্তারের ত্রুটি নয়। এখানে কারও কিছু করার ছিল না। ময়নাতদন্ত করলেই বিষয়টি পরিষ্কারভাবে বোঝা যাবে। পুলিশকেও আমি একই কথা বলেছি।

তবে সাগর আলী বলছেন, জন্মের সময় কোনো ত্রুটি থাকলে সেটা আল্ট্রাসনোগ্রামে দেখা যেত। কিন্তু রিপোর্ট স্বাভাবিক ছিল। 

আলমডাঙ্গা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জামাল বলেন, এ ঘটনায় মারা যাওয়া শিশুর বাবা সাগর আলী বাদী হয়ে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

চুয়াডাঙ্গার সিভিল সার্জন বলেন, আমি এ ঘটনা শুনেছি। এ ঘটনায় তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। রিপোর্ট পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব। 

এসপি