সাংবাদিকদের জন্য সচিবালয় গোপন স্থান নয় : মিসবাহ
প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামকে অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টে মামলার সমালোচনা করেছেন সুনামগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও বিরোধীদলীয় হুইপ আইনজীবী পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ।
বৃহস্পতিবার (২০ মে) রাতে তার নিজস্ব ফেসবুক ওয়ালে পোস্ট করে এমন সমালোচনা করেন। এ সময় তিনি সচিবালয় সাংবাদিকদের জন্য কোনো গোপন স্থান নয় বলে মন্তব্য করেন। রোজিনা ইসলামের বিষয়টি কোনোভাবেই সৎ সরকারি কর্মকর্তা, সরকার এবং দেশের জন্য সুখকর নয় বলেও মনে করেন এই সংসদ সদস্য।
বিজ্ঞাপন
ফজলুর রহমান মিসবাহ তার নিজ আইডিতে লিখেছেন, ‘অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট ব্রিটিশ শাসনামলে প্রণয়ন করা হয়। ১৮৯৯-১৯০৫ সাল পর্যন্ত লর্ড কার্জন যখন ভারতবর্ষের ভাইসরয়, তখন এই আইনটি হয়। কয়েক দফা সংশোধিত হয়ে ১৯২৩ সালে অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট জারি হয়।
ব্রিটিশরা ভারতবর্ষের মানুষকে শাসন করত। ভারতবর্ষের অনেকে কাজ করতেন ব্রিটিশ প্রশাসনে। মূলত প্রশাসনে কাজ করা ভারতবর্ষের লোকজনের প্রতি অবিশ্বাস থেকে ব্রিটিশ শাসকরা এই অ্যাক্ট জারি করে।
বিজ্ঞাপন
১৯২৩ সালের এই আইনের ৩ ধারায় বলা হয়েছে, নিষিদ্ধ স্থানে যদি কেউ যায় বা যেতে উদ্যত হয় কিংবা ওই স্থানের কোনো নকশা বা স্কেচ তৈরি করে বা কোনো গোপন তথ্য সংগ্রহ বা প্রকাশ করে, তবে সে অপরাধী হবে। ৩ (ক) ধারায় বলা হয়েছে যে নিষিদ্ধ স্থানের কোনো ফটো, স্কেচ বা নকশা কেউ প্রকাশ করতে পারবে না।
সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের আগে বাংলাদেশে এই আইনে কোনো মামলা হয়নি। সাংবাদিকদের জন্য বাংলাদেশের সচিবালয় গোপন কোনো স্থান নয়। সচিবালয়ে যাবার জন্য সাংবাদিকদের পাস দেওয়া হয়। সাংবাদিকরা সেখানে তথ্য সংগ্রহের জন্য যান। সেটা জেনেই তাদের সচিবালয়ে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। নিশ্চয় সাংবাদিকরা সেখানে বেড়ানোর জন্য যান না।
ভারতে একবার মন্ত্রিসভার গোপন নথি ফাঁস হয়ে যাওয়ার ভিত্তিতে একজন সাংবাদিক মি. সাইকিয়া একটি নিবন্ধ লিখেছিলেন। তার বিরুদ্ধে তখন অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টে মামলা হয়েছিল। দিল্লি হাইকোর্ট সেই মামলায় মি. সাইকিয়াকে অব্যাহতি দিয়ে বলেছিলেন, কোনো নথি ফাঁস হলে সেটিকে 'গোপন' আখ্যা দিয়ে একজন সাংবাদিককে অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের আওতায় দোষী করা যায় না।
রোজিনা ইসলামের বিষয়টি কোনোভাবেই সৎ সরকারি কর্মকর্তা, সরকার এবং দেশের জন্য সুখকর নয়।’
সাইদুর রহমান আসাদ/এনএ