বরিশাল রুটে লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক, স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত
অনুমতি পাওয়ার পর থেকেই লঞ্চ চলাচল শুরু করেছে বরিশালের অভ্যন্তরীণ নৌ-রুট। আর পূর্বের নির্ধারিত সময়ে সোমবার (২৪ মে) সন্ধ্যায় ঢাকার উদ্দেশে বরিশাল নদী বন্দর ত্যাগ করবে বিলাববহুল পাঁচটি লঞ্চ।
জানা গেছে, সোমবার সকাল ৬টা থেকে বরিশালের অভ্যন্তরীণ সবগুলো রুটে যাত্রী পরিবহন করছে ছোট লঞ্চ। এসব লঞ্চে যাত্রীদের মাস্ক পরিধান বাধ্যতামূলক করে মালিক-শ্রমিকদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বরিশাল নদী বন্দর কর্মকর্তা ও বিআইডব্লিউটিএর উপ-পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান।
বিজ্ঞাপন
তিনি জানান, আমরা এখন মাস্ক পরিধানের ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করছি। নদী বন্দরে যাত্রীদের স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণে উৎসাহিত করতে কাজ করছি।
বিজ্ঞাপন
নদী বন্দর ঘুরে দেখা গেছে, খুব সকাল থেকেই বিভিন্ন গন্তব্যে যাতায়াতের জন্য পন্টুনে ভিড় করছেন যাত্রীরা। এ সময় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে দেখা যায়নি। যাত্রীরা পন্টুনে সামাজিক দূরত্ব এবং মাস্ক সঠিকভাবে না পরলেও লঞ্চে উঠার সময় মাস্ক পরে উঠছেন। আবার লঞ্চ ছেড়ে যাওয়ার পরে মাস্ক খুলে ফেলেন বলে একাধিক লোক জানিয়েছেন।
জোবায়ের হোসেন নামে ভোলাগামী এক যাত্রী বলেন, চেষ্টা করি মাস্ক পরতে। কিন্তু মাস্ক পরলে নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হয়। সে জন্য লঞ্চে উঠার সময় মাস্ক পরি। পরে খুলে রেখেছি।
পাতারহাটগামী আরেক যাত্রী খলিলুর রহমান বলেন, জনগণের জন্যই এই লকডাউন দিতে হয়েছে। জনগণ যদি মাস্ক পরতেন, দূরত্ব বজায় রেখে চলতেন তাহলে এসবের কিছুই লাগত না। অনেক দিন পর লঞ্চ চলাচল শুরু করছে, এখন অন্তত ‘বেশি বোঝা’ মানুষগুলোর উচিত হবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাচল করা।
এমভি মানামী লঞ্চের মাস্টার আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, নির্দেশনা পাওয়ার পর লঞ্চ ধুয়ে-মুছে প্রস্তুত করা হয়েছে। আজ সন্ধ্যায় যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করব আমরা। তিনি আরও বলেন, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী অর্ধেক যাত্রী নিয়ে যাতায়াত করবে। পূর্বে ডেকে জনপ্রতি ভাড়া ছিল ২০০ টাকা। যা বর্তমানে ৪০০ টাকা করে নেওয়া হবে বলে জেনেছি। তবে কেবিনের ভাড়া আগের মতোই থাকবে।
এমভি সুরভী ৯ লঞ্চের মাস্কার শুক্কুর আলী বলেন, আজ বরিশাল থেকে ঢাকার উদ্দেশে এমভি পারাবত ১০, সুন্দরবন ১০, সুরভী ৯, কির্তনখোলা ১০ এবং মানামী যাত্রী নিয়ে যাবে। আমরা সরকারি সকল নির্দেশনা অনুসরণ করেই যাত্রী পরিবহন করব।
ভোলার উদ্দেশে যাত্রী নিয়ে সদরঘাট ত্যাগ করা লঞ্চের মাস্টার জানান, স্বাস্থ্যবিধি মেনেই যাত্রী নিয়ে ভোলার উদ্দেশে যাত্রা করেছি। দুপুর দেড়টার দিকে ভোলা ঘাটে পৌঁছাব। তিনি বলেন, অনেক আন্দোলনের পর অনুমতি পেয়েছি। এবার স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাচলে যাত্রীদের বাধ্য করব।
বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের বরিশাল অঞ্চলের সভাপতি শেখ আবুল হাশেম বলেন, সকাল থেকেই বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, মেহেন্দীগঞ্জ, হিজলা, কালীগঞ্জ, লালমোহন, চরকলমি, বোরহানউদ্দিন, বাহেরচর রুটে লঞ্চ চলাচল করছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে আজ যাত্রীদের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছি। যদি তারা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে অনিচ্ছুক হয় তাহলে প্রশাসনের সহায়তায় আমরা তাদের স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণে কাজ করব।
সৈয়দ মেহেদী হাসান/এসপি