ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ও পূর্ণিমার প্রভাবে উত্তাল রয়েছে বঙ্গোপসাগরের কক্সবাজার উপকূল। স্বাভাবিকের চেয়ে জোয়ারের পানি কয়েক ফুট বৃদ্ধি পেয়ে উপকূলে আছড়ে পড়ছে। এতে সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে টেকনাফের সেন্টমার্টিন দ্বীপ। দ্বীপের চারপাশে বেড়িবাঁধ না থাকায় জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে পশ্চিম ও দক্ষিণ দিক। একই সঙ্গে ঝড়ো বাতাস ও বৃষ্টিতে ভেঙে পড়েছে গাছপালা।

অন্যদিকে দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়ার আলী আকবর ডেইল, উত্তর ধূরুং, লেমশীখালী, মহেশখালীর ধলঘাটা, মাতারবাড়ী, সেন্টমার্টিন দ্বীপ, টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ, কক্সবাজার সদরের গোমাতলীসহ উপকূলের বিভিন্ন এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে।

এদিকে কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরকে স্থানীয় ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদফতর। একই সঙ্গে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সতর্কতার কথা জানানো হচ্ছে।

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিপদাপন্ন সময়ে নিরাপদ অবস্থান নিশ্চিত করতে উপকূলের সাইক্লোন শেল্টার ও উঁচু ভবনগুলো প্রস্তুত রাখতে সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রশাসনকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৫৭৬টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রসহ প্রায় এক হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং বহুতল ভবন। জরুরি মুহূর্তে লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিতে সহযোগিতার জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে ১০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক।

সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর আহমদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, মঙ্গলবার (২৫ মে) ভোররাত রাত থেকে ঝড়ো বৃষ্টি শুরু হয়। পুর্ণিমা ও ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের কারণে সাগরে জোয়ারের পানি কয়েক ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে। বড় বড় ঢেউ এসে আছড়ে পড়ছে। দ্বীপের পশ্চিম ও দক্ষিণ দিকে পানি প্রবেশ করেছে। গাছপালা পড়ে একেবারে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছে। ভেঙে পড়ছে একমাত্র জেটিটিও।

কুতুবদিয়া উপজেলার উত্তর ধূরুং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আ. স. ম শাহারিয়ার চৌধুরী ঢাকা পোস্টকে বলেন, দ্বীপের উত্তর ধূরুং, লেমশীখালী ও আলী আকবর ডেইলের বেড়িবাঁধগুলো চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ও পূর্ণিমার প্রভাবে জোয়ারের বাড়ন্ত পানি এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত করছে। পানি ঢুকেছে অনেক বাড়িতে। চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন দরিদ্ররা। 

কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিধ আব্দুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, ১৬ নম্বর বুলেটিন অনুযায়ী ঘূর্ণিঝড়টি কক্সবাজার সমুদ্র বন্দর থেকে ৫১০ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থান করছে। তাই তিন নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। 

মুহিববুল্লাহ মুহিব/আরএআর